ঈদের আগের দিন দুই ঘাটে দীর্ঘ সারি

ঈদযাত্রার শেষ দিনে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। দুই ঘাটেই পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2017, 06:26 AM
Updated : 1 Sept 2017, 06:26 AM

শুক্রবার সকালে শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় সহস্রাধিক যান। অপর দিকে পাটুরিয়া ঘাটে পাটুরিয়া-উথলী সংযোগ সড়কের তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে যানবাহন।

তাছাড়া অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সকাল থেকে যানবাহনগুলোকে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে। এতে যাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ সময় লেগে যাচ্ছে।

এদিকে শিমুলিয়ায় ভোর ৬টায় এনায়েত পুরী এবং শাহ পরান নামে দুটি রো রো ফেরি মাঝ পদ্মায় আটকে পড়ে। দুই ঘণ্টা পর ফেরি দুটি উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে ঘাটে জট আরও বৃদ্ধি পায় বলে জানান শিমুলিয়া বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শাহ নেওয়াজ খালেদ।

তিনি বলেন, ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে গেছে। তার উপর নাব্যতা সংকটে বৃহস্পতিবার রাত থেকে রো রো ফেরিগুলো ঠিকমত চলতে না পারায় ঘাটে জট দেখা দিয়েছে। সকালে দুইটি রো রো ফেরি আটকা পড়ায় ঘাটে অপেক্ষায় থাকা গাড়ির সংখ্যা আরও বেড়েছে।

“নদীতে স্রোত ও বাতাসের কারণে এমনিতেই ফেরিগুলো চলতে সময় বেশি লাগছিল, তার  সাথে এখন যোগ হয়েছে নাব্যসংকট। তারপরও যাত্রীদের পারাপারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।”

এই রুটে ১৯টি ফেরি দিয়ে শুধু যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকার পার করা হলেও দুপুরের পর চ্যানেলে পানি কম থাকায় চারটি রো রো ফেরি ও একটি কে টাইপ ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন ম্যানেজার আহমেদ আলী জানান।

তিনি বলেন, নদীতে নাব্যতা না থাকায় রো রো ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি যে ১৪টি চলছে তাও কম লোড দিয়ে চালানো হচ্ছে।

ফলে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে সব ঘাটের পয়েন্টেই।

স্রোতের কারণে পাটুরিয়া ঘাটেও পারাপারে দ্বিগুণ সময়ের সঙ্গে গাড়ির চাপ ঘাটে দীর্ঘ সারির কারণ বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে যানবাহন পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগছে। এ কারণে ফেরির ট্রিপসংখ্যা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক পরিস্থিতির তুলনায় কিছুটা কম যানবাহন পারাপার হচ্ছে।

সকালে চাপ থাকলেও বিকালে যানজট পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে বলেও জানান বিআইডব্লিউটিসির এ কর্মকর্তা।

পাটুরিয়াগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসের চালক ইকবার হোসেন বলেন, সকাল ৬টায় গাবতলী থেকে যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সাড়ে ৫ ঘণ্টায় পাটুরিয়ায় পৌঁছান। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায় গাবতলী থেকে পাটুরিয়ায় যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।

শুক্রবার বিভিন্ন যানবাহন দীর্ঘ সারিতে আটকা পড়ে। বর্তমানে ১৭ টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হয়।

এ সময় পাটুরিয়া-উথলী সংযোগ সড়কের আরসিএল মোড় এলাকায় আটকে আছে সার্বিক পরিবহনের একটি বাস।

বাসের যাত্রী দেওয়ান শফিকুল ইসলাম বলেন, “গাবতলী থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় আরসিএল মোড়ে এসেছি। এরপর এক ঘণ্টায় মাত্র এক কিলোমিটারে এগিয়েছে বাস। ফেরিতে উঠতে বিকেল হবে বলে মনে হচ্ছে।”         

বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়া পাঁচ নম্বর ঘাট থেকে নালী-টেপড়া সড়কের প্রায় চার কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ সারিতে ব্যক্তিগত গাড়িগুলোও আটকে থাকতে দেখা গেছে।