বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুলিশ ও র্যাব জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ওই বাড়ি ঘিরে তল্লাশি চালালেও ঢাকা থেকে আসা বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিট বোমা ও বোমার কোনো আলামত পায়নি বলে পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, তারাব পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বরাব কবরস্থান রোড এলাকায় ‘কুমিল্লা হাউজ টু’ নামের ওই বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটে।
দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণের পর ভবনের পশ্চিম পাশের দেয়াল এবং দোতলার পার্টিশন দেয়াল ধসে পাশে তাজুল ইসলামের টিনশেড বাড়ির ওপর পড়ে।
বিস্ফোরণের পর ওই বাড়িতে আগুন ধরে গেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তা নেভায়। বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী আবুল খায়েরের ছেলে ইব্রাহিম (২২) ও শ্যালক আয়নাল হককে (২৬) দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা এসে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলেন। ঢাকা থেকে এসে সকালে বাড়ির ভেতরে তল্লাশি শুরু করেন বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা। বাড়িওয়ালা আবুল খায়ের, কেয়ারটেকার শরিফুল ইসলাম এবং শরিফুলের স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
পাশের টিনশেড বাড়ির মালিক তাজুল বলেন, “রাতের বেলায় হঠাৎ বিকট শব্দ হল। আমরা মনে করলাম ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ। বাইরে এসে দেখি এই অবস্থা। দেয়াল ভেঙে আমার ভাড়াটিয়া রুবিনার মায়ের ঘরের ওপর পড়ছে। তারা কান্নাকাটি করতেছে।”
ঈদের আগের দিন এই পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ আসার পর এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। জেলার পুলিশ সুপার মঈনুল হক, র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, “বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দলের তদন্তে ওই দোতলা বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ বা বোমার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা, গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা।”
বাড়ির মালিক আবুল খায়ের সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন; পাশের ঘরে ছিলেন তাদের ছেলে ইব্রাহিম আর শ্যালক আয়নাল। রাতে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে উঠে দেখেন তাদের বাসা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
“পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করেছে। আমি তাদের বলেছি, আপনারা প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমি তাদের তদন্তে সন্তুষ্ট।”
আবুল খায়ের জানান, গত ২৫ বছর ধরে তিনি কুয়েতে থাকেন। ঈদ করতে অনেকদিন পর এবার দেশে এসেছেন।