শিশু হাসমি হত্যায় মাসহ চার জনের ফাঁসির রায়

খুলনায় নয় বছরের শিশু হাসমি মিয়াকে হত্যার ঘটনায় তার মাসহ চারজনের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2017, 05:57 AM
Updated : 29 August 2017, 09:25 AM

মঙ্গলবার খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মাৎ দিলরুবা সুলতানা আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে হাসমির মা সোনিয়া আক্তার, মো. নুরুন্নবী, মো. রসুল, মো. হাফিজুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি রাব্বি সরদারকে আদালত খালাস দিয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে খুলনা নগরীর আড়ংঘাটার মানিকতলার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খানের মেয়ে সোনিয়ার সঙ্গে মো. হাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর হাফিজুর বিদেশে চলে যান। স্বামীর অনুপস্থিতিতে সোনিয়া উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।

দেশে আসার পর বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী হাফিজুর তিনি স্ত্রীকে শোধরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তালাক দেন স্ত্রীকে। হাসমি থেকে যায় বাবার সঙ্গে। এরপর হাসমিকে বাবার কাছ থেকে অপহরণ করার জন্য নুরুন্নবী ও রসুলকে ভাড়া করেন সোনিয়া।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালের ৬ জুন রাত পৌনে ৯টার দিকে অপহরণকারীরা হাসমিকে অপহরণের পর তার মায়ের কাছে নিয়ে যায়। এরপর চুক্তিমতো সোনিয়া স্থানীয় সরদার ডাঙ্গায় একটি বাঁশ ঝাড়ে যান ওই দুই যুবকের সঙ্গে। সেখানে তাদের অশ্লীল আচরণ শিশু হাসমি মিয়া দেখে ফেলে।

এ কারণে অপহরণকারীরা সোনিয়ার সামনেই হাসিমকে গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করে। পরে তার লাশ সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদার ডাঙ্গা বিলের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয় বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।

তিনদিন পর (৯ জুন) খুলনা নগরীর কার্ত্তিককুল এলাকা থেকে শিশু হাসমির বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বাবা মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাসমির মা সোনিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আড়ংঘাটা থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে গত বছর ৩০ জুন হাফিজুরকে বাদ দিয়ে তিন জনের নামে অভিযোগপত্র দিলে তাতে নারাজি দেন হাসমির বাবা। 

পুনরায় তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক মিঠু রানী দাসি গত ২৮ ডিসেম্বর সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলাটি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসার পর পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে গত ২ এপ্রিল বিচার শুরু করে আদালত।