রোহিঙ্গাদের দিকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের গুলি

রাখাইন রাজ্যে নতুন করে গোলযোগের কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা গুলি ছুড়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিশঙ্কর বড়ুয়া রুমিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2017, 07:55 AM
Updated : 26 August 2017, 07:57 AM

শনিবার দুপুরে এই গুলিবর্ষণের পর সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে বলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানিয়েছেন।  

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেলা সোয়া ১টার দিকে তারা তিন থেকে চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।”

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু এলাকায় শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে সীমান্তের ওপার থেকে গুলি চালায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক রাতে ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনার পর উত্তেজনা আর শঙ্কার মধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার বাংলাদেশে প্রবেশের পর নাফ নদীর প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীরে বসে আছে সহায় সম্বলহীন কয়েক হাজার মানুষ।

তারা যাতে কক্সবাজারের ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। আগের রাতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক ১৪৬ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে মিয়ানমারে।

মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের ওই হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছে।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরণার্থী মোহাম্মদ শফি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারে তার খালাতো ভাইয়ের কাছ থেকে যে খবর তারা পাচ্ছেন, তাতে পরিস্থিতি খুবই খারাপ।

“চারদিকে কেবল সেনাবাহিনী। অনেক মানুষ মারা গেছে, লোকজন কাঁদছে। খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে সব।”

মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে কয়েক দশক ধরে। মুসলিম রোহিঙ্গাদের নিজ দেশেরন নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও নতুন করে শরণার্থী নিতে অপরাগতা জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। নতুন করে আশ্রয় না দেওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার যুক্তিও দেখানো হচ্ছে।