ফেনীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিক বন্ধ

ফেনী শহরের মিশন হাসপাতালে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে; এ ঘটনার পর প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2017, 09:58 AM
Updated : 26 August 2017, 04:57 AM

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় চিকিৎসকের অনুপস্থিতে নার্সরাই প্রসবকালীন চিকিৎসা দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মুক্তা বেগম (৩২) ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়নের ওমান প্রবাসী হারুনুর রশীদের স্ত্রী।

মুক্তার মা শাহেনা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রসববেদনা শুরুর পর মুক্তাকে মদিনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘ফেনী মিশন হাসপাতালে’ ভর্তি করা হয়।

“কিছুক্ষণ পর মুক্তা ও তার নবজাতক মেয়েকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের এর কোনো কারণ বলা হয়নি। তখন জানতে পারি তারা দুইজনই মারা গেছে। আর মিশন হাসপাতালে যারা মুক্তার সন্তান প্রসবে চিকিৎসা দেন তারা সবাই নার্স বলেও পরে জানতে পারি।”

এ ঘটনার পর নিহতের স্বজনা হাসপাতালে ভিড় করলে নার্স-কর্মচারীরা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে এ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আবু ইউসুফ নার্সদের চিকিৎসা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিকিৎসকই চিকিৎসা দিয়েছেন। ডেলিভারির সময় এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

তবে তিনি চিকিৎসকের নাম বলতে পারেননি।

ঘটনার পর হাসপাতালটিতে র‌্যাব-পুলিশ অবস্থান নেয়।

সদর থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, “খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও র‌্যাব হাসপাতালে অবস্থান নিলে কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসাপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।”

পরে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এম এনামুল করিম বলেন, তিনি ও সিভিল সার্জন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

“মিশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১ রোগীকে ফেনী সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেওয়ার পর প্রশাসন ক্লিনিকটি বন্ধ ঘোষণা করে।”

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।

জেলার সিভিল সার্জন হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, “প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর এ ঘটনায় একটি উচ্চক্ষমতার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নিহত মুক্তার ফুফাত ভাই সাইফুল ইসলাম বলেছেন, “মুক্তাকে সুস্থ অবস্থায় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায়ই আমার বোন-ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

নিহত মুক্তা বেগমের তামিম নামে পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে বলে তিনি জানান।