বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের গাইনী ইনচার্জ আঞ্জুমান আরা বকুল এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের তিন সদস্যের দলের তত্ত্বাবধানে বুধবার বিকালে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তাতে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহ করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।”
মেডিকেল পরীক্ষার পর বুধবার রাতেই মেয়েটিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মহিষলুটি-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের বিদ্যাধর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়।
ওইদিন থেকে মেয়েটির ছোট ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এর তিন দিন আগে মেয়েটি ও তার ছোট ভাই সিরাজগঞ্জে বোন জামাইয়ের বাড়ি বেড়াতে যায়।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই মেয়েটি বাদী হয়ে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক মহির উদ্দিন ও একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন।
বুধবার সকালে তাদের গ্রেপ্তারের পর বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে মেয়েটির নিখোঁজ হওয়া ছোট ভাই বুধবার একাই বাড়ি ফিরে আসে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাড়াশ থানার এসআই সাচ্চু বিশ্বাস জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণে হয়, মঙ্গলবার বিকালে তাড়াশের মহিষলুটি এলাকায় চলনবিল দেখতে মেয়েটি। সঙ্গে তার ছোট ভাইও ছিল।
পথে তাদের দুলাভাই সরুজ আলীর বন্ধু আনিসুর রহমান কৌঁশলে তাদের একটি অটোরিকশায় তুলে স্থানীয় বিদ্যাধর এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।
সন্ধ্যার পর ওই বাড়ি থেকে তার ভাইকে তারা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আনিসুর ও তার বন্ধু মহির মিলে মেয়টিকে ধর্ষণ করে।
পরে তার মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যায়।
এসআই সাচ্চু বলেন, “মেডিকেল পরীক্ষার পর বুধবার রাতেই মেয়েটিকে তার মায়ের সঙ্গে তার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে মেয়েটির ছোট ভাই বুধবার একাই বাড়ি ফিরে এসেছে বলে তার মা পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন।”
তবে মেয়েটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বোন জামাই বা তাদের বাড়ি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
মেয়েটি তথ্য গোপন করছে বলে তারা ধারণা করছেন।
তাড়াশ থানার ওসি মঞ্জুর রহমান বলেন, “কিশোরীর দেওয়া তথ্য বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। এছাড়া তার ছোট ভাই কিভাবে একাই বাড়ি পৌছালো সে বিষয়টিও পরিষ্কার নয়।”
মেয়েটি তার বাড়ি থেকে একাই সিরাজগঞ্জ গিয়েছিল নাকি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল এ সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি ।
তবে গ্রেপ্তার হওয়া দুই যুবলীগ নেতা জিজ্ঞাসাবাদে কোন তথ্য দিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২ যুবলীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে দলের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে বলে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান।