অবশ্য পুলিশ বলছে, মো. আলম (৩৫) নামের ওই যুবক থানার ‘তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী’। বুধবার গ্রেপ্তারের পর রাতে তাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে বের হলে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার সাত পুলিশ সদস্য আহত হন বলে পুলিশের দাবি।
নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষা চন্দ্র দাস জানান, নিহত আলম বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৭টি মামলা রয়েছে, যার মধে্যে ১০টিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি সাজেদুর রহমান সাজিদের ভাষ্য।
তিনি বলেন, ওই পরোয়ানায় বুধবার আলমকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গভীর রাতে তাকে নিয়ে আমানউল্লাপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয়নারায়নপুর গ্রামে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল।
“সেখানে উপস্থিত আলমের সহযোগীরা পুলিশের দিকে গুলি ছুড়ে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। জবাবে পুলিশও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
“আলমের সহযোগীদের ছোঁড়া গুলিতে আলম গুরুতর আহত হন। গুরুতর অবস্থায় আলমকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎক মৃত ঘোষণা করেন।”
ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপগান ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। আলমের লাশ ময়না তদন্তের জন্যে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওসি সাজিদ বলেন, আলমের সহযোগীদের ছোড়া গুলিতে বেগমগঞ্জ থানার এসআই শিশির কুমার, এসআই আবদুল্লাহ আল বাকী, এএসআই আবদুল করিম, কনস্টেবল মাহবুবুল আলম, মাহবুবুল আলম, আবদুল করিম ও হাসান জখম হয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা, অস্ত্র ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।
এদিকে আলমের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার নয়, মঙ্গলবার সকালে এই যুবদল নেতাকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে চৌমুহনী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আলমের স্ত্রী পুষ্প বেগম অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাধারণ পোশাকের একদল লোক মঙ্গলবার সাকালে তাদের বাড়িতে এসে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়।
“আমরা বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও লক্ষ্মীপুর র্যাব ক্যাম্পে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা কিছুই জানাতে পারেনি।”
স্বামীকে ফিরে পেতে ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের হস্তপেক্ষ চেয়েছিলেন পুষ্প।