শুক্রবার সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে এবং দুপুরে দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করেন সেতুমন্ত্রী কাদের। এ সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি এলাকাও পরিদর্শন করেন।
সৈয়দপুরে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, সহায়সম্পদ হারিয়েছেন, শেষ সম্বলটুকু হারিয়েছেন তাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকার তাদের পাশে থাকবে।
“এবারের বন্যায় রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর, সয়সম্বল হারিয়েছে মানুষ। এবারের বন্যা বহু বছরের নজিরবিহীন বন্যা।”
ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উত্তরের জেলাগুলোতে প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, নওগাঁ, জামালপুরে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। সরকারের হিসাবে প্রাণ হারিয়েছে ৭৭ জন।বহু ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ ডুবে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সৈয়দপুরে মন্ত্রী তিনশ বন্যার্ত মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল ও পাঁচশ করে টাকা বিতরণ করেন।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৈয়দপুরে এলেও বানভাসী মানুষকে কিছুই দেননি বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় তিনি সুপ্রিম কোর্টের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণে জিয়াউর রহমনের ক্ষমতা দখল নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নেতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল এবং উড়ে এসে জুড়ে বসা ব্যানানা রিপাবলিক বানানোর বিষয়ে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য নিয়ে দেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রায়ের এ পর্যবেক্ষণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তা অপসারণের দাবি করলেও বিএনপি রায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়।
সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্বাস উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সাংসদ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংসদ গোলাম মোস্তফা, সাংসদ নাজমুল হক প্রধানসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর
দুপুরে সেতুমন্ত্রী দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে দিনাজপুর সদরের পাঁচবাড়ী এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়ক পরিদর্শন করেন এবং জরুরি ভিত্তিতে মহাসড়ক মেরামতের নির্দেশ দেন।
পরে তিনি সদর উপজেলার কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন। বন্যার্তদের মাঝে তিনি চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, বিএনপি দুর্গত মানুষের পাশে কখনওই ছিল না। তারা কিছুই দিবে না, শুধু বক্তৃতা দিবে।
“আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি প্রধানমন্ত্রী আসবেন এবং আপনাদের সব ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করবেন।”
বিরলে ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক স্থানীয় সাংসদ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায় প্রমুখ।