উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মহিলা সদস্য নমিতা দেব জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে ডাকাতদল বৌলাশীর ও গন্ধর্বপুর গ্রামে একের পর এক বাড়িতে হানা দেয়।
ডাকাতরা দরজা ও জানালা ভেঙে লুটপাটের পাশাপাশি দা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে আঘাত করে তিনজনকে আহত করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নমিতা এসব বাড়ির সদস্যদের বরাতে বলেন, ডাকাতদল প্রায় ১২ ভরি সোনার গয়না ও ১০ লক্ষাধিক টাকাসহ মূল্যবান মালপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের জেলার মুজিবুর রহমানের বাড়ি বৌলাশীর গ্রামে। এই বাড়ির রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে ডাকাতরা। তারা বাড়ির সদস্যদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুজিবুর ও তার তিন ভাই বাদশা মিয়া, ফারুক মিয়া ও হাবিবুর রহমানের ১০টি ঘরে তছনছ করে এবং ২০টি স্টিলের আলমারি ও ওয়র্ডরোব ভেঙে লুটপাট চালায় বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
পরে ডাকাতদল একই গ্রামের রমা দেবের বাড়ি ঢোকার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এ সময় ডাকাতরা দা দিয়ে কুপিয়ে তাকে আহত করে।
রমা বলেন, তিনি চিৎকার দিলে গ্রামবাসী এগিয়ে আসে। এ সময় ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
এখান থেকে পালিয়ে ডাকাতদল পাশের গন্ধর্বপুর গ্রামে রাখাল দের বাড়ি ঢুকে ধারালো অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে।
রাখাল দের স্ত্রী সুমতী বলেন, তার ছেলের বিদেশ থেকে ৪০ হাজার টাকা ও তিন ভরি সোনার গয়না পাঠিয়েছিলেন।
“ঋণ করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। ছেলের পাঠানো প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা ও তিন ভরি সোনার গয়নার পুরোটাই নিয়ে গেল ডাকাতরা।”
ডাকাতের লোহার রডের আঘাতে রাখাল দে আহত হয়েছেন বলে সুমতীর অভিযোগ।
একই সময় ডাকাতদল গ্রামের দক্ষিণ পাশের সিতু দেবের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। সিতু ঘরের ভেতর থেকে চিৎকার দিলে পাশের ঘরের সুকান্ত কর ঘর থেকে বেরিয়ে এলে ডাকাতরা তার মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় বলে ইউপি সদস্য নমিতা দেব জানান।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, ডাকাতরা বৌলাছড়া চা-বাগান হয়ে হবিগঞ্জের বাহুবলের দিকে পালিয়ে গেলে গ্রামবাসীরা তাদের ধাওয়া করে। খবর পেয়ে পুলিশ যোগ দেয় জনতার সঙ্গে।
“এ সময় বৌলছড়া মন্দিরের পাশে জামাল উদ্দিনের বাসার দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাহুবল এলাকার এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ তাকে মুজিবুর রহমানের বাড়ি নিয়ে গেলে তিনজন তাকে শনাক্ত করেন। ”
আটক ডাকাতের মাধ্যমে অন্য ডাকাতদের আটকসহ লুট হওয়া মালপত্র উদ্বারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি নজরুল ইসলাম।
এক রাতে এতগুলো বাড়িঘরে ডাকাতের হানায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়াসহ ওই এলাকার লোকজন।