কুড়িগ্রামে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি   

কুড়িগ্রামের সাতটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার কবলে রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। নানা সমস্যার সঙ্গে রোগব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছে বানভাসি মানুষ।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিআহসান হাবিব নীলু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2017, 05:54 PM
Updated : 16 August 2017, 06:04 PM

ব্রক্ষপুত্র নদ ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার থেকে বন্যা দুর্গদের সহায়তায় সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী- বুধবার সকালে চিলমারী পয়েন্টে ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ফেরিঘাট পয়েন্টে ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

কুড়িগ্রাম ত্রাণ শাখার প্রধান অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, “কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, চিলমারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা এখন ভয়াবহ বন্যার কবলে। প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে।”

সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে সদর উপজেলার কাঠালবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে চার শতাধিক নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে খিচুড়ি বিতরণ করে সেনাবাহিনীর একটি দল। পরে ওই আশ্রয় কেন্দ্রে মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়। শতশত নারী-পুরুষ সেখানে সেবা নেন।

এছাড়া নাগেশ্বরী ও চিলমারী উপজেলায় সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহযোগিতা করছে।

কাঠালবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া রুবিনা বেগম বলেন, “খাবার কষ্ট সহ্য করা যায়, কিন্তু অসুখের কষ্ট সহ্য করা যায় না।

“গত পাঁচদিন ধরে এ আশ্রয় কেন্দ্রে আছি। তিন দিন ধরে পাতলা পায়খানা, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা এবং বাচ্চার জ¦র-সর্দি নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। আর্মির ডাক্তার দেখে ওষধ দেওয়ায় আমার খুব ভাল লাগছে।”

মোসলেমা বেগম বলেন, “ছয় মাসের শিশু সন্তান মেহিদিকে নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। জ¦র আর সর্দিতে ভুগছিল। আজ সিরাপ পেলাম সেনাবাহিনীর কাছ থেকে।”

কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল হক দুলাল বলেন, তার ইউনিয়নের সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি; তাদের দুঃখ কষ্ট সীমাহীন ও অবর্ণনীয়।

তিনি বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নয়টি আশ্রয় কেন্দ্রের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের মধ্যে দুই বেলা খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে প্রতিদিন দুই হাজার কেজি চাল প্রয়োজন হচ্ছে।”

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংটুর ঘাট এলাকায় ওয়াপদার বাঁধের ১০০মিটার ভেঙে যাওয়ায় পানি ঢুকে পড়ছে বলে জানান তিনি।