নোয়াখালীতে চোর সন্দেহে ৪ জনকে পিটিয়ে হত্যা

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় গরুচোর সন্দেহে চারজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী; এছাড়া আহত হয়েছেন আরও দুইজন।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2017, 02:51 AM
Updated : 10 August 2017, 07:58 PM

চরজব্বর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের কচ্চবিয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব মাইজচরা গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে  নিজাম(৩৫),  সুবর্ণচর উপজেলার কাটাবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন(৩২) এবং খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার নেমুয়া গ্রামের এনায়েত উল্লার ছেলে কামাল হোসেন(৪০)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ময়নাতদন্তের পর নিজাম ও কামালের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জাকিরের স্বজনরা তার মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার ও অজ্ঞাত পরিচয় একজনের মরদেহ দাফনের জন্যে আঞ্জুমানে মফিদুলে হস্তান্তর করা  হয়েছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহতদের মধ্যে নিজামের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় আটটি মামলা রয়েছে। জাকিরের বিরুদ্ধে হাতিয়া,  চৌদ্দগ্রাম ও সীতাকুণ্ড থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর চরক্লার্কে পিকআপ ভ্যান নিয়ে গরু চুরির সময় জাকিরকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দেয় লোকজন। পরে সে জামিনে বেরিয়ে আসে।

গরু চুরি ও গণপিটুনির ঘটনায় সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গণপিটুনিতে সন্দেহভাজন চার গরুচোর মারা যাওয়ার ঘটনায় উপ- সহকারী পুলিশ পরিদর্শক সাইদুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় চারশ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। আর গরু চুরির ঘটনায় চর জুবলী গ্রামের সহিদুল ইসলাম সুমন বাদী হয়ে নিহত ও আটক ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।

ঘটনার বিষয়ে ওসি নিজাম বলেন, ওই গ্রামে কদিন ধরে গরু চুরি হয়ে আসছিল। চোর ধরার জন্য এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা বসায়।

“ভোরের দিকে পিক-আপে করে সাত-আটজনের একটি দল কচ্চবিয়া গ্রামে গেলে এলাকাবাসী ঘেরাও করে মারধর দেয়। আগুন ধরিয়ে দেয় তাদের পিকআপে। এ সময় ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।”

এছাড়া আরও দুইজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আহতদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহতরা হলেন - চরজুবলি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বেলালের ছেলে হেলাল (২২) ও একই এলাকার আবদুল হামিদের ছেলে জাহাঙ্গীর (৪০)।