বুধবার দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জুডিশিয়াল মুন্সীখানা (জেএম) শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শামসুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করে এসব লাইসেন্স দেন।
জানতে চাইলে রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এখানে যোগ দেওয়ার পর গত ১৪ মে স্বাক্ষর জাল করে অবৈধভাবে লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি জানতে পারি।
“১৭ মে পুলিশের সহযোগিতায় জেএম শাখায় শামসুলের কক্ষে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু আগেই টের পেয়ে শামসুল পালিয়ে যান।”
ওইদিন জেএম শাখায় শামসুলের আলমারির তালা ভেঙে নগদ সাত লাখ টাকা এবং তার নামে থাকা ১১ লাখ টাকার দুটি এফডিআর ও দুই লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানান ওয়াহিদুজ্জামান।
এছাড়া ওই আলমারি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ইস্যু করা ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্সও জব্দ করা হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, এ ঘটনায় ১৮ মে জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অমূল্য চন্দ্র রায় বাদী হয়ে শামসুলের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।
এ মামলা তদন্ত করছেন রংপুর দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ৭ জুলাই এবং ১৩ জুলাই দুই দফায় আটদিন হেফাজতে নিয়ে শামসুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শামসুল ২০০৩ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের ৬ জুলাই এবং ২০১১ সালের ১৭ মে থেকে চলতি বছরের ১৭ মে পর্যন্ত জেএম শাখায় অফিস সহকারী পদে থাকার সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর জাল করে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ‘মোট ৩০২ জনের নামে আগ্নেয়াস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স দেওয়ার কথা স্বীকার করেন’।
শামসুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার মাধ্যমে ভুয়া লাইসেন্স নেওয়া ব্যক্তিদের গত ২ অগাস্ট থেকে নোটিশ দেওয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে দুদক কর্মকর্তা আতিকুর বলেন, এর প্রেক্ষিতে ভুয়া লাইসেন্সধারীরা তাদের অস্ত্র ও লাইসেন্স নিয়ে রংপুর দুদক কার্যালয়ে আসছেন।
“বুধবার পর্যন্ত ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬১৩টি কার্তুজ জমা হয়েছে। এরমধ্যে ৬টি একনলা বন্দুক এবং ৪৯টি শর্টগান রয়েছে।”
শামসুল নগরীর খোর্দ্দ তামপাট এলাকার সফিউদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল আজিজ ভুঁইয়া এবং রংপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।