গত ১ মে থেকে ৩১ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত হ্রদে মাছ ধরা ও হ্রদ এলাকায় মাছ বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষে মঙ্গলবারই জেলেরা হ্রদে নেমেছেন। পাইকাররাও ইতোমধ্যেই তাদের সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
এবার এখান থেকে সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিকটন মাছ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে তিনি জানান।
রাঙামাটি শহরে বিএফডিসি ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, পাইকাররা বিভিন্ন জায়গায় মাছ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটে ভারি যান চলাচল বন্ধ থাকায় তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
পাইকার মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “তিন মাস পর আবার মাছ ধরা চালু হচ্ছে। আমরা খুব খুশি। আশা করছি এবার ব্যবসা ভালো হবে।
“তবে রাস্তার সমস্যা আমাদের খুব চিন্তায় ফেলেছে। বড় গাড়ি দিয়ে মাছ পরিবহন করা যাবে না। ছোট পরিবহন ব্যবহার করতে হবে। এতে করে পরিবহন খরচ বেশি পড়ে যাবে।”
মাছ ধরা শুরু হলেও হ্রদের পাঁচটি অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।
সেগুলো হল - ফিশারি ঘাটের সামনে দুই বর্গকিলোমিটার, লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিস সংলগ্ন দুই বর্গকিলোমিটার, জেলা প্রশাসকের বাংলো এলাকায় ১২ বর্গকিলোমিটার, বনবিহার এলাকায় ৫৩.৫০ একর ও নানিয়ার চর উপজেলার ছয়কুড়ি বিলের ২০০ একর।
এছাড়া নয় ইঞ্চির চেয়ে ছোট কোনো মাছ ধরা যাবে না। বিএফডিসির নির্ধারিত অবতরণ কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোথাও মাছ নামানো যাবে না, নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ না করে কোনো মাছ বা শুঁটকি বিক্রি করা যাবে না।
জেলেদের মাছ ধরার আগে নিবন্ধন করতে হয়। পাইকারি বাজারে কেনাবেচায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শুল্ক দিতে হলেও যেসব জেলে মাছ ধরে নিজেরাই স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করেন তাদের শুল্ক দিতে হবে না।
১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের ফলে প্রায় ৭২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই হ্রদ সৃষ্টি হয়। সেই থেকে এটি রাঙামাটিতে পানি ও আমিষের প্রধান উৎস, পরিবহনের প্রধান পথ।
গত ১১ এপ্রিল রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় ১ মে থেকে ৩১ জুলাই মাছ ধরা ও পরিবহন বন্ধ করে আদেশ জারি করা হয়। প্রায় ২০ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে দেওয়া হয় খাদ্যসহায়তা।