‘এক এক করি চার ভাঙা দেইল’

ভাঙনের কবলে পড়েছে কুড়িগ্রামের তিস্তা পাড়ের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খাঁ গ্রাম। দুই সপ্তাহে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে স্কুল, রাস্তা, বাজার, মসজিদ-মন্দিরসহ অসংখ্য স্থাপনা।

আহসান হাবীব নীলু কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2017, 01:59 PM
Updated : 24 July 2017, 02:21 PM

সোমবার সরেজমিন তৈয়বখাঁ এলাকা ঘুরে জানা যায়, চলতি মাসে আড়াইশ বসত বাড়ি, তৈয়বখাঁ বাজার, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ পুকুর, সুপারি বাগান তিস্তার গর্ভে চলে গেছে।

এখন ভিটেমাটি হারানোর আশংকায় রয়েছেন এ গ্রামের অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার।

টিনের ঘর সরানোর কাজ করছিলেন ওই গ্রামের ফনিন্দ্রনাথ (৬৫)।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২২ বছর এই ভিটায় ছিলাম। জমি ছিল, পুকুর ছিল, সুপারির বাগান ছিল। সব তো নদী নিয়ে গেল। এখন নিজের থাকার জায়গা নাই। ”

এক প্রতিবেশীর বাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তৈয়বখাঁর সোমনারায়ণ এলাকার মালেকা (৫২) বলেন, “বেটাক ভাত দিবার পারি নাই। অবুঝ ছওয়াক কাম করতে ঢাকাত পাঠাইছি। এক এক করি চার ভাঙা দেইল।

“পরে এক শতক মাটি কিনি বাড়ি করছি। সেও মাটি ভাঙি গেইল। থাকপের কোন পথ নাই। আমি সাহায্য চাই না। নদীর কাজ চাই”

শচিন, রফিকুল, শফিক, সুলতান, মাখন, নুরজামাল, ইসমাঈল, শফিকুল ও মনিন্দ্র মেম্বারসহ সোমনারায়ণ এলাকার লোকদের দাবি, “ত্রাণ বা সাহায্য নয়। আপনারা সরকারকে বলেন বেড়িবাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করুক।”

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে ৩০ লাখ টাকার বরাদ্দ দিয়ে পাইলিং ব্যবস্থা কোনো কাজে আসেনি। ছোট ছোট বরাদ্দ দিয়ে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়।

বড় অংকের বাজেট বরাদ্দ দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাময়িকভাবে ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাৎক্ষণিকভাবে বস্তা ফেলে বাঁশ দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অতিরিক্ত আরো ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ কাজে লাগানো হচ্ছে।