ফেনীতে বাঁধ ভেঙে বন্যা, পাউবোর গাফিলতির অভিযোগ

ফেনীতে বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে; বন্ধ রয়েছে ফেনী-পরশুরাম সড়কে যান চলাচল।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2017, 10:16 AM
Updated : 21 July 2017, 10:17 AM

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে ফুলগাজীতে প্রতিবছর বাঁধ ভেঙে অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কোহিনূর আলম বলছেন, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলসহ চার দিনের টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানির চাপে সিলোনিয়া বেড়িবাঁধের দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া, জয়পুর ও টেটেশ্বর অংশে ভাঙন ধরেছে।

“এতে ওইসব জায়গায় ৩০ থেকে ৫০ মিটার বাঁধ ধসে নদীর পানি অন্তত ১০টি গ্রামে প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, বৈরাগপুর, জয়পুর, টেটেশ্বর, ঘনিয়ামোড়া, মনিপুরসহ ১০ গ্রামের মানুষ।”

এছাড়া নিখলী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, সাহেব নগর, মেলাঘর গ্রামে পানি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

ফুলগাজী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তার ইউনিয়নে শতাধিক মাছের খামার ও পুকুর ভেসে গেছে। নষ্ট হয়েছে আমনের বীজতলা।

“আর ফেনী-পরশুরাম সড়ক কোমরপানিতে তলিয়ে থাকায় শুক্রবার সকাল থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।”

ফেনী সদর ও পরশুরাম উপজেলায় অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে তিনি তার ধারণার কথা জানিয়েছেন।

উত্তর দৌলতপুর গ্রামের কাজি সফিকের বাড়ির সকিনা খতুন বলছেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকে ঘরের ভেতরে।

“তীব্র স্রোতে ঘরের মেঝে ভেঙে যায়। চুলায় পানি জমে থাকায় রান্না করতে পারছি না। আমার মতো পাশের মাস্টার বাড়ির চিত্রও একই রকম।”

বাঁধ উপচে পানি ঢুকে ফুলগাজি বাজার তলিয়ে গেছে বলে ফুলগাজী ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক লোকমান আলী জানিয়েছেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আলিম অভিযোগ তুলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে ফুলগাজীতে প্রতিবছরই মুহুরী নদীর কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়।

বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ নদী খনন ও বাঁধ সংস্কার করছে না বলে তার অভিযোগ।

তবে প্রকৌশলী কোহিনূর বলছেন, বাঁধটি অনেক পুরনো। যথেষ্ট বরাদ্দ না থাকায় প্রয়োজনমতো সংস্কার করা সম্ভব হয় না।