বন্যা: গাইবান্ধায় দেড়শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

গাইবান্ধায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2017, 05:49 PM
Updated : 14 July 2017, 05:57 PM

এখনও জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষিজমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট, পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যাসহ নানা রকমের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্তত দেড়শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, বন্যার্তদের মধ্যে সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ব্যাপক কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

সরেজমিনে ও জেলা প্রশাসন থেকে জানা যায়, বন্যা কবলিত চারটি উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় নাকাল হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, পানির তীব্র স্রোতের কারণে ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে।

তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙন উপদ্রুত ৭০টি পরিবারের মধ্যে তিনি ত্রাণ বিতরণ করেছেন বলে জানান।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ শামছুল আলম হীরু বলেন, সরকারি ত্রাণ তৎপরতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও কাজ করছেন। তবে শিগগিরই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রিলিফ বিতরণ করা হবে।

জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান মন্ডল বলেন, “আমরা এখনও ত্রাণ তৎপরতায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় যেতে পারিনি। তবে শিগরিগই দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রশিদ সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার তিনি ফুলছড়ির দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকায় মানুষের এখন হাহাকার অবস্থা। শীঘ্রই জাতীয় পার্টির ত্রাণ তৎপরতা চালানো হবে।

পানির কারণে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর, উপজেলার ১৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকার আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ১৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সুন্দরগঞ্জে ১৫টি, গাইবান্ধা সদরে ১৯টি, ফুলছড়িতে ৬৫টি এবং সাঘাটা উপজেলায় ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।

“বাকি ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গাইবান্ধা সদরে দুইটি হাইস্কুল ও মাদ্রাসা দুইটি, ফুলছড়ির চারটি হাইস্কুল ও দুইটি মাদ্রাসা, সুন্দরগঞ্জে দুটি মাধ্যমিক ও সাঘাটায় দুটি মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি ‘স্থিতি অবস্থায়’ আছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী বলেন, এ পর্যন্ত মোট ৩২৫ মেট্রিক টন চাল ও ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে অর্ধেক ত্রাণ বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। বাকি ত্রাণের বিতরণ কার্যক্রম চলছে। আরও ত্রাণ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বন্যায় ১২ হাজার সাতশ বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪১ হেক্টর জমির পাট, আউশ ধান, আমন বীজতলা ও শাকসবজি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।