বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ত্রাণমন্ত্রীর

ত্রাণ নিয়ে কোনো দুর্নীতি ক্ষমা করা হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2017, 04:05 PM
Updated : 14 July 2017, 04:09 PM

শুক্রবার জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যারয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় তিনি একথা বলেন।

“বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট দূর না হওয়া পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। দেশের একটি মানুষও না খেয়ে ও গৃহহীন থাকবে না।

“ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কেউ টালবাহনা বা দুর্নীতির আশ্রয় নিলে ক্ষমা করা হবে না।”

উজানের ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বন্যার পর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

এ সময় ত্রাণমন্ত্রী বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সংসদ সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানান।

সভায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেক সদস্য উপস্থিত না থাকায় মন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি এ অনুপস্থিতিকে মন্ত্রী দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে উল্লেখ করে যেসব কর্মকর্তা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় অনুপস্থিত ছিলেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

অনুপস্থিত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রতিবেদনসহ স্বস্ব মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

বন্যা মোকাবিলায় যেকোনো কর্মকর্তার অবহেলা বা অনিয়ম কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করেন।

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ এই সভায় বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সংসদ সদস্য রেজাউল করিম হীরা, সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ মোশারফ বেবী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক রিয়াজ রহমান, জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর, পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের আমতলী বাজারে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

শুক্রবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জামালপুরে বিতরণের জন্য ইতিমধ্যে ৩২৫ মেট্রিক টন চাল, নয় লাখ ৫০ হাজার টাকা ও চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার নতুন করে আরও ২০০ মেট্রিক টন চাল, পাঁচ লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়।