এমসি কলেজে ব্যাপক ভাংচুর, ছাত্রাবাস বন্ধ

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগকর্মীরা অর্ধশত কক্ষ ভাংচুরসহ লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে; এ ঘটনার প্রতিবাদসহ হামলাকারীদের বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2017, 08:48 AM
Updated : 13 July 2017, 09:47 AM

বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রাবাসের তিনটি ব্লকে এসব কক্ষ ভাংচুরের ঘটনায় ছাত্রাবাসটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন।

তবে কারা হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

শাহপরাণ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন ছাত্রাবাস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানালেও কারা হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

শিক্ষার্থীরা বলছে, সকাল ৯টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা টিটু চৌধুরীর নেতৃত্বে বহিরাগত ছাত্রলীগকর্মীরা ছাত্রাবাসে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে ছিল।

হামলাকারীরা ছাত্রাবাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ ও অন্যান্য মূল্যবান মালপত্র লুট করে বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রাবাসের প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম ব্লকের অন্তত ৫০টি কক্ষের দরজা-জানালা ভাংচুর করা অবস্থায় দেখা গেছে।

এসব ব্লকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক স্কুলবিষয়ক সম্পাদক হোসাইন আহমদের অনুসারীরা থাকতেন।

ছাত্রবাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগনেতা টিটু চৌধুরী ও হোসাইন আহমদের অনুসারীদের মধ্যে কদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য।

এ ঘটনার প্রতিবাদসহ হামলাকারীদের বিচার দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত টিলাগড়-আম্বরখানা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

এ বিষয়ে টিটু চৌধুরী ও হোসাইন আহমদের বক্তব্য জানার জন্য মোবাইলে ফোন করে বন্ধ পাওয়া গেছে।

হামলা ও ভাংচুরের পর কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ থাকবে।

“সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এছাড়া কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

শাহপরাণ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলছেন, ছাত্রদের বিবদমান দুটি পক্ষ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রবাসে হামলা ও ভাংচুর করেছে। ঘটনার পর থেকে ছাত্রাবাস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

গত ২০১২ সালের ৮ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের পর শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ ছাত্রাবাসে প্রায় অর্ধশত কক্ষ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি পক্ষকে দায়ী করে মামলা হলেও অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।