গ্রেপ্তারের পর মূল আসামি অন্যের নাম পরিচয় ব্যবহার করেন এবং আদালত থেকে জামিন নিয়ে মুক্ত হওয়ার পর পলাতক রয়েছেন।
এদিকে, আসামি যে নাম ও পরিচয় দিয়েছিলেন সেই পরিচয়ের ব্যক্তির নামে অভিযোগপত্র হয় এবং যথারীতি মামলা শুরু হয়। মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণও শেষ হয়েছে।
মামলায় সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৮ সালের ৮ মে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নাটোর সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল ওয়াহাব খান বড়াইগ্রাম উপজেলার মাড়িয়া এলাকায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে ২০ বোতল ফেন্সিডিলসহ বাসের এক যাত্রীকে আটক করেন।
আটক যাত্রী নাটোর সদর উপজেলার দস্তানাবাদ স্কুল পাড়ার মো. হালিমের ছেলে মো. মিঠু (২৪) বলে নিজের পরিচয় দেন। গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাস সাত দিন হাজতবাস শেষে জেলা জজ আদালত থেকে তিনি ওই বছরের ১৫ জুলাই জামিন নেন এবং জেল থেকে ছাড়া পান।
নাটোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আনিছুর রহমান তার জামিনে সহায়তা করেন।
কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পর ওই আসামি আর আদালতে হাজিরা দেননি। ফলে ২০০৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত তার জামিন আদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ইতিমধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অদিদপ্তরের একই সার্কেলের উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই অভিযোগপত্রের শেষ পাতায় উল্লেখ করা হয়, আসামি মো. মিঠুর পরিচয় যাচাই করে নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া গেছে।
ওই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে মামলার কাজ শুরু হয় এবং চারজন সাক্ষীর একতরফা সাক্ষ্য গ্রহণও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু পুলিশেএখনও মূল আসামিকে পুনরায় গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
সম্প্রতি নাটোর সদর থানার পুলিশ ওই পরোয়ানা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে জানতে পারে, মো. মিঠু নামের যেই ব্যক্তি ওই ঠিকানায় আছেন তাকে কখনও এর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মীরা আটক করেননি এবং তিনি কখনও হাজতও খাটেননি।
মিঠু বলেন, তিনি একজন বাস চালক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তিনি স্বেচ্ছায় বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন এবং জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার জামিন দেয়; কিন্তু প্রতি তারিখে তাকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়।
এখন মামলার রায় হলে সাজা ভোগ করতে হয় কিনা ভেবে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান মিঠু।
জামিন গ্রহণকারী আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, আসামি জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি পালিয়েছেন। পরে যে ব্যক্তি আদালতে হাজির হয়েছেন তিনি আগের আসামি নন। এখন পুরো বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন।
মামলার বাদী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নাটোর সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল ওয়াহাব খান জানান, আসামি ধরার পর তিনি যে পরিচয় দিয়েছেন তাই তিনি এজাহারে লিখেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, অনেকদিন আগের ঘটনা। এ ব্যাপারে তার কিছু মনে নাই।