রূপগঞ্জে অস্ত্র উদ্ধার: গ্রেপ্তার ৫ জন রিমান্ডে  

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে খাল থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের হেফাজতে নেওয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।  

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2017, 03:40 PM
Updated : 4 June 2017, 03:42 PM

নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মেহেদী হাসান রোবাবার এ আদেশ দেন।

শুক্রবার খাল থেকে ৬২টি এসএমজি, দুইটি দূরবীন, দুটি রকেট লঞ্চার, এসএমজির ৪৪টি ম্যাগজিন, পাঁচটি পিস্তল, ৪৯টি শেল, দুইটি ওয়াকিটকি, ৪২টি হ্যান্ড গ্রেনেড, বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস, টাইম ফিউজসহ বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়।

শনিবার উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের বাসুন্দ্র আতলাবো এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আরও পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করা হয়।

শনিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মাহমুদুল ইসলাম বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার আছেন।

মামলার আসামিরা হলেন গ্রেপ্তার শরিফুল ওরফে শরীফ, শাহীন ওরফে সানা, রাসেল, শান্ত, মুরাদ এবং পলাতক হৃদয়।

হৃদয় কাতারে পলাতক রয়েচেন বলে জানান এসপি মঈনুল।

জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার আবেদন জানায়। শুনানি শেষে আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

এসপি মঈনুল বলেন, শনিবার বিকালে রপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব বাসুন্দা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা মুরাদ নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, হৃদয় মাছ ধরতে গিয়ে পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের খালে একটি ব্যাগ পান। এ ব্যাগে বেশ কয়েকটি এসএমজি ছিল বলে তিনি শরীফুল ওরফে শরীফকে জানান। এরপর শরীফুল ওরফে শরিফ, শাহীন, রাসেল, শান্ত, হৃদয় ও মুরাদ এসব অস্ত্র নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়ে নেন এবং বিক্রির চেষ্টা করতে থাকেন।

তারা ঘটনাচক্রে এসব অস্ত্রের একাংশের সন্ধান পান; কিন্তু এরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অস্ত্রের ব্যাপারে না জানিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখে দেন। এসব আসামির হেফাজত থেকে আটটি অস্ত্র পাওয়া যায়।

আটটি অস্ত্রের মধ্যে শরিফুল ওরফে শরীফের বাসা থেকে একটি, শাহীন, শান্ত ও রাসেলর দেয়া তথ্য মতে পূর্বাচলের ৩ নম্বর সেক্টরের ব্লু সিটি আবাসন প্রকল্পের মাটি খুড়ে দুটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

পরে মুরাদের দেওয়া তথ্য মতে শনিবার বিকালে ভোলাব ইউনিয়নের বাসুদা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করা হয়।

এসপি মঈনুল হক বলেন, যেহেতু অস্ত্রগুলো আসামিদের হেফাজতে ছিল ও তারা এগুলি বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে।

“পুরো অস্ত্রের চালানের ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। তবে এই মামলার সূত্র ধরেই পুরো অস্ত্রের চালানের বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান চালাব। মামলার পলাতক আসামি কাতারে অবস্থানকারী হৃদয়কেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে পরদিন শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশ রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের একটি খাল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ঢাকা রেঞ্চের ডিআইজি শফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ১২ সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এ কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।