শীতলক্ষ্যা থেকে আরও ৫ এসএমজি উদ্ধার

রূপগঞ্জের একটি খাল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারের পর এবার নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আরও পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2017, 02:02 PM
Updated : 3 June 2017, 02:33 PM

অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শনিবার ভোলাব ইউনিয়নের বাসুন্দ্র আতলাবো এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মামুনুর রশিদ জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার পর বাসুন্দা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে একটি বস্তায় ভরা অবস্থায় পাচঁটি এসএমজি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।

পূর্বপাড় থেকে প্রায় ৩০/৩৫ ফুট নদীর মধ্যে অস্ত্রগুলি ফেলে রাখা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

শুক্রবার রূপগঞ্জের একটি খাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ৬২টি এসএমজি, দুইটি দূরবীন, দুটি রকেট লঞ্চার, এসএমজির ৪৪টি ম্যাগজিন, পাঁচটি পিস্তল, ৪৯টি শেল, দুইটি ওয়াকিটকি, ৪২টি হ্যান্ড গ্রেনেড, বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস, টাইম ফিউজসহ বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদ উদ্ধার করে।

এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

অস্ত্রের উৎস জানা যায়নি

রূপগঞ্জের খাল থেকে শুক্রবার উদ্ধার করা অস্ত্রের উৎস জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম।

শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস বিফিংয়ে তিনি বলেন, “অস্ত্রের উৎস কী, কোথায় তৈরি হয়েছে সেটি জানার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ অর্ডান্যান্স ফ্যাক্টরি ও চীন থেকে বাংলাদেশ পুলিশ যে অস্ত্র কেনে, সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখেছি তার সঙ্গে উদ্ধার করা অস্ত্রের কোনো সামঞ্জস্য নেই।”

আরও দুই একটি দেশের অস্ত্রের সঙ্গে মিল রয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখার সঙ্গে সেনাবাহিনী ও সিআইডির বিশেষজ্ঞদের কাছে মতামত চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, “উৎস দেশ যদি জানতে পারি; তাহরে এগেুলো কীভাবে আমাদের দেশে এলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল সেগুলোও জানা যাবে।”

অস্ত্র হেফাজতে রাখার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ডিআইজি শফিকুল ইসলাম।

গ্রেপ্তাররা হলেন- শরীফ খান, শান্ত, রাসেল, শাহীন।

ডিআইজি শফিকুল বলেন, “হৃদয় নামে এক যুবক (বর্তমানে বিদেশে আছে) খালে মাছ ধরতে গিয়ে একটি বস্তা তার পায়ে লাগে। সে একটি বস্তা তুলে ৯/১০টি অস্ত্র পায়। পরে তারা বিভিন্ন জায়গায় তা লুকিয়ে রাখে।

“এরই মধ্যে তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র (এসএমজি) উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ৫/৬ টি অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”

তবে মূল অস্ত্রের চালানের সঙ্গে গ্রেপ্তারদের কোনো সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “মাছ ধরতে গিয়ে যে অস্ত্রগুলি পেয়েছে সেগুলো তারা বিক্রি বা অপরাধ সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে মাটিতে লুকিয়ে রেখেছিল বলে ধারণা করছি।”

তবে উদ্ধার করা অস্ত্রগুলোর জঙ্গিদের ব্যবহার করা অস্ত্রের মিল নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জঙ্গিরা আরও ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে। তবে চট্টগ্রামে উদ্ধার দশ ট্রাক অস্ত্রের সঙ্গে যোগসাজশ থাকতে পারে।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ) মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি (সিআইডি) তৌফিকুর রহমান, এসবির মাহবুরবু চৌধুরী, পিআইবির এসপি আবুল কালাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক।