এ অভিযোগে বাদল ঝালকাঠি সদর থানায় বৃহস্পতিবার একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এদিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাদলকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জিডিতে বাদল অভিযোগ করেন, এমপি বিএইচ হারুনের মালিকানাধীন বনানীর হোটেল রেইনন্ট্রিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার সংবাদে ফেইসবুকে লাইক দেওয়ার ঘটনায় গত ১৬ মে কাঁঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদার, মনির ওরফে জামাই মনির ওরফে ইয়াবা মনির, শহিদুল ইসলাম ওরফে খুনি সহিদ, সেলিম হাওলাদার, আনেচ ওরফে টেম্পু আনেচ, এনাম কাজী ওরফে ইয়াবা ডিলার কাজী, মিলন মাস্টার ওরফে ভুয়া মাস্টার ও মিলন সিকদারসহ ১৫/২০ জনের ‘সন্ত্রাসী’ দল তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় এরপর থেকে বাদল ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বাদল আরও অভিযোগ করেন, গত কদিন ধরে আসামিদের সহযোগী মামুন ওরফে কঠিন মামুন, মনির ওরফে জামাই মনির, শহিদ ওরফে খুনি শহিদসহ মামলার আসামিরা এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৫/৭ জন লোক বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে বাদলকে সেখান থেকে নাম কেটে এবং মামলা তুলে নিয়ে বাড়ি যেতে হুমকি দেয়।
তাদের কথা না শুনলে তাকে হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার হুমকি দেয় বলে জিডিতে অভিযোগ করা হয়।
আসামিরা বাদলের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধা মাকেও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ বাদলের।
বাদল হাসপাতালে থাকায় জিডিটি সহকর্মী বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোমার ঝালকাঠি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন রুবেলের মাধ্যমে থানায় পাঠানো হয়।
বাদল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডাক্তারা আমাকে বলেছেন উপরের চাপ আছে, তাই আপনার নাম কাটা হয়েছে।”
খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে বাদলের সহকর্মীরা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত ঝালকাঠির সিভিল সার্জন শ্যামল কৃষ্ণ হালদার সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি আমি দেখছি।”
পরে বাদলকে আগামী শনিবার পর্যন্ত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২৮ মার্চ ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করার ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃস্টি হয়।
ওই ঘটনায় ‘ফেইসবুকে একটি পোস্টে লাইক দেওয়ায়’ গত ১৬ মে বিকাল ৩টার দিকে কাঁঠালিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের পেছনে ধরে নিয়ে বাদলকে লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে আহত করে একদল লোক।
ওই ঘটনায় ২০ মে রাতে কাঁঠালিয়া থানায় মামলা দিতে গেলে ওসি এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম তা গ্রহণ করেননি বলে স্থানীয় সাংবাদিক নেতারা অভিযোগ করেন।
গত মঙ্গলবার ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রুবাইয়া আমেনা কাঁঠালিয়া থানার ওসিকে এজাহার গ্রহণের আদেশ দেন।
ওই মামলায় ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদারসহ নয় জনকে আসামি করা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন মনির হোসেন, শহিদুল ইসলাম, সেলিম হাওলাদার, মো. আনিচ, মনির খান, এনাম কাজী, মিলন মাস্টার ও মিলন সিকদার।