ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান: ৩ জনের স্বীকারোক্তি

ঝিনাইদহের মহেশপুর ও সদর উপজেলায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে গ্রেপ্তার তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2017, 10:34 AM
Updated : 19 May 2017, 11:52 AM

এরা হলেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের বজরাপুর গ্রামের জহুরুল ইসলাম, সদরের চুয়াডাঙ্গা গ্রামের সেলিম রেজা ও প্রান্ত হোসেন।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলি শেখ জানান, শুক্রবার বিচারিক হাকিম কাজী আশরাফুজ্জামানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জহুরুল ইসলামের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

গত ৭ মে ভোর থেকে বজরাপুর গ্রামের একটি একতলা টিনশেড বাড়ি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপারেশন ‘সাটল স্প্লিট’ অভিযান চালায়। অভিযানে তুহিন এবং আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত একজন নিহত হন।

ওই বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম ও তার ছেলে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাড়ির ভেতরে চারটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়, উদ্ধার করা হয় দুটি পিস্তল।

ওই ঘটনায় মহেশপুর থানার এসআই খবির উদ্দিন বাদী হয়ে পরদিন থানায় একটি মামলা করেন, যাতে জহুরুল ইসলাম ও তার ছেলে জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলি শেখ আরও জানান, ৭ মে ভোরে জহুরুল ইসলামের বাড়ির অভিযানে ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে এবং তুহিন নামে অপর ‘জঙ্গি’ পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন।

এর আগে মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদরের চুয়াডাঙ্গা গ্রামের জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার সেলিম রেজা (৪৫) ও প্রান্ত হোসেন (২০) আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে মুখ্য বিচারিক হাকিম এস এম মনিরুজামানের আদালতে তারা দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন বলে র‌্যাব-৬ এর ঝিনাইদহ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানিয়েছেন।  

জবানবন্দি গ্রহণের পর তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

ঝিনাইদহে গত এক মাসে পাঁচটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

গত ২০ এপ্রিল সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

দুই দিনের সেই অভিযান শেষে ২০টি কেমিকেল কন্টেইনার, ছয়টি বোমা, তিনটি সুইসাইড ভেস্ট, নয়টি সুইসাইড বেল্টসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। 

এরপর গত ৫ মে মহেশপুর উপজেলায় এক বাড়িতে পুলিশের অভিযানে নব্য জেএমবির দুই জঙ্গি নিহত হন। আর সদর উপজেলার লেবুতলায় আরেক বাড়িতে পাওয়া যায় আটটি বোমা ও একটি ৯ এমএম পিস্তল।

আর ৭ মে জেলার মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে মারা যান সোমবার চুয়াডাঙ্গা গ্রামে আটক সেলিমের ভাই তুহিন

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদরের চুয়াডাঙ্গা গ্রামে দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালানো হয়, যা চলে দেড়দিন। এ অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে জঙ্গি আস্তানার আশপাশ থেকে দুটি সুইসাইড ভেস্ট, পাঁচটি বোমা, ১৮টি ডিনামাইট স্টিক ও বোমা তৈরির ১৮৬টি সার্কিট বোর্ড উদ্ধার করা হয়।

অভিযানের আগের রাতে ওই গ্রামের তুহিনের ভাই সেলিম ও তার চাচাত ভাই প্রান্তকে আটক করে র‌্যাব।