সাংবাদিককে মারধরে এমপি হারুনের সমর্থকরা

ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ বিষয়ে ‘ফেইসবুকে একটি পোস্টে লাইক দেওয়ায়’ ঝালকাঠিতে এমপি বি এইচ হারুনের সমর্থকরা এক সাংবাদিককে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2017, 11:51 AM
Updated : 17 May 2017, 04:58 PM

কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কিবরিয়া সিকদারের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন দৈনিক বরিশাল প্রতিদিনের কাঁঠালিয়া প্রতিনিধি এইচ এম বাদল।

আলোচিত ধর্ষণের ঘটনাস্থল রেইনট্রি হোটেলের মালিক ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনের সংসদ সদস্য হারুনের সন্তানরা।

তার ছোট ছেলে মাহির হারুন গত ২৮ মার্চ ওই ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের জন্মদিনের কেক পাঠিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।  

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাদল সাংবাদিকদের বলেন, রেইনট্রি হোটেলে ছাত্রী ধর্ষণ, হোটেল থেকে মদ উদ্ধার ও সংসদ সদস্য হারুনকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ফেইসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

“এরই একটি সংবাদে ফেইসবুকে লাইক দিয়েছি কেন জানতে চেয়ে আমাকে লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কিবরিয়া সিকদার ও তার লোকজন।”

মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে কাঁঠালিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের পেছনে ধরে নিয়ে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে বাদলের অভিযোগ।

পরে আত্মীয়স্বজন গিয়ে বাদলকে উদ্ধার করে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রাকিব রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাদলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পা ও কোমরেও গুরুতর আঘাত আছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ঝালকাঠির আয়োজনে বুধবার দুপুরে শহরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

তারা বাদলের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সবাবেশেরও ডাক দিয়েছেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাদলকে মারধরে নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার বিরুদ্ধে এমপির বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন কাঁঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কিবরিয়া।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এমপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোসহ সাংবাদিক বাদলের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। আমি বাদলকে মারধর করিনি। এমপির বিরুদ্ধে লেখায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ছেলেরা হয়ত মারতে পারে।”

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য এমপি বি এইচ হারুনকে ফোন করলে তিনি ধরেননি। পরে তার মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠালে তার জবাবও পাওয়া যায়নি।