ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মেয়েসহ মায়ের আত্মহত্যা

পঞ্চগড়ে প্রতিবন্ধী মেয়েসহ এক গৃহবধূ ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।

সাইফুল আলম বাবু পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2017, 12:13 PM
Updated : 13 May 2017, 12:13 PM

শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বকুলতলায় পঞ্চগড়-পার্বতীপুর লাইনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া গ্রামের অরুণ বসাকের মেয়ে শ্যামলী বসাক (২২) ও তার মেয়ে মনি বসাক (২)।

পারিাবরিক কলহের জেরে শ্যামলী আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী রশিদুল ইসলাম বলেন, একটু দূরেই তারা কয়েকজন বসে গল্প করছিলেন। এক সময় তারা ওই নারীকে কোলে শিশু নিয়ে ট্রেন লাইনের কাছ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখেন। কিছুক্ষণ পর ট্রেন এলে ওই নারী ট্রেন লাইনের উপর উঠে যান এবং দুজনই কাটা পড়েন।

“পরে সেখানে পাওয়া একটি ব্যাগে গৃহবধূর মোবাইল ফোন এবং তাদের পরিচয় লেখা একটি কাগজে পাওয়া যায়।”

রশিদুল জানান, ব্যাগে পাওয়া মোবাইল থেকে ফোন করে মহিলার বাবা অরুণ বসাককে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে এসে মেয়ে ও নাতনিতে শনাক্ত করেন।

অরুণ বসাক বলেন, শ্যামলীর মেয়ে মনি বসাক বাক প্রতিবন্ধী ছিল। তিন বছর আগে ঠাকুগাঁওয়ে মেয়ের বিয়ে হয়। স্বামীর নির্যাতনে টিকতে না পেরে এক বছর পরই মেয়ে বাড়ি চলে আসেন। পরে এনজিও পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।

মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রতি সপ্তাহে শ্যামলী পঞ্চগড় আসতেন। শনিবারও একই কারণে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন জানিয়ে অরুণ বলেন, “পারিবারিক কলহের কারণেই সে তার শিশুকন্যাকে নিয়ে ট্রেনের নিচে জীবন দিয়েছে।”

এদিকে আব্দুল খালেক, রবিউল ইসলামসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দুর্ঘটনাস্থল ও পঞ্চগড় রেলস্টেশন মাত্র ৮/১০ মিনিটের পথ। অথচ এ দুর্ঘটনার পর লাশ ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকতেই এক ঘণ্টা পর ট্রেনটি আবার একই পথ দিয়ে চলে গেছে।

ওই ট্রেনের গার্ড আব্দুর রহিমকে ফোন করলে তিনি বলেন, দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটার পর ১২টায় পঞ্চগড় স্টেশনে ট্রেন পৌঁছে। পরে লালমনিরহাট কন্ট্রোল রুম ও পঞ্চগড় স্টেশন মাস্টারের সঙ্কেত পেয়ে সোয়া ১টায় একই পথে আবার ট্রেনটি পঞ্চগড় ছেড়ে যায়।

এ সময় লোকজনের ইশারাতেই ট্রেনটি ধীরে ধীরে ওই পথ অতিক্রম করে বলে তিনি জানান।

রেলওয়ের পঞ্চগড় স্টেশন মাস্টার বজলুর রহমানের দাবি, স্টেশনের লোকবলের সঙ্কট রয়েছে। এজন্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লোক ঘটনাস্থলে পৌঁছে কেউ কাটা পড়েছে কিনা তা জানাতেই ট্রেনটি ওই পথ অতিক্রম করে চলে যায়।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুদর্শন কুমার রায় জানান, রেলওয়ে পুলিশ এসে লাশ সরানোসহ আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।