ঠাকুরগাঁওয়ে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে কবরস্থান ও শ্মশান দখলের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি গ্রামের কবর ও শ্মশানের জমি দখল করে বাগান করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2017, 10:21 AM
Updated : 11 May 2017, 10:23 AM

অভিযোগ, উপজেলার ভোমরাদহ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান ও তার সাত চাচাতো ভাই কুশারীগাঁও গ্রামের কবরস্থান ও শ্মশানের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জমি দখল করেছেন। 

এ বিষয়ে গত ৩১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক, পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামবাসীর জন্য বরাদ্দ কবরস্থান ও শ্মশানের ৮০ বিঘা জমির প্রায় ৩০ বিঘা দখল করে সেখানে থাকা কবর ভেঙে ফেলা হয়েছে; শ্মশানের জমিতে হালচাষ করে লাগানো হয়েছে চারা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের পাল্টা হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কবর ও শ্মশানের পুকুরের চারপাশের জমিগুলোতে ভুট্টা ক্ষেত ও আমের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।

তবে ‘নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে’ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান সরকারি জমি দখল করেছেন বলে দাবি করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ওই গ্রামের কুতুব উদ্দীন বলেন, “আমাদের চৌদ্দগুষ্টি ওই গোরস্থানে শুয়ে আছেন। অথচ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান ও তার ভাইয়েরা জমিদখল করে আমগাছ লাগিয়েছে।”

মোবার আলী বলেন, “ওই কবরস্থানে আমাদের পূর্ব পুরুষদের কবর আছে। সেসব ভেঙে চাষ দিয়ে সেখানে আমগাছ রোপন করা হয়েছে।”

সুরেন্দ্র নাথ বলেন, “পুকুরের উত্তর ও পূর্ব পাড়ের ঢালের জমিগুলো শ্মশান হিসেবে ব্যবহার করছেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা। আজ সেই শ্মশানের জায়গা দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েজন ব্যক্তি।”

শাহমত আলী নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, “আব্দুল মান্নান ক্ষমতার অপব্যবহার করে কবর ও শ্মশানের জমি দখল করে নিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি দিচ্ছে।”

এ বিষয়ে জানতে আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “পুকুরের চারপাশ মানে গোরস্থান ও শ্মশানের রেকর্ডভুক্ত জমি বাদ দিয়েই ১৫ বিঘায় আম গাছ রোপন করেছি।”

“আমাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। এগুলো আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি; আমাদের কাছে কাগজপত্র আছে। ”

ভোমরাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.হিটলার হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আব্দুল মান্নান ও তার ভাইদের কবর ও শ্মশানের জমিতে গাছ রোপন করতে নিষেধ করা হলেও তারা শোনেনি।

একই অভিযোগ করে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “আব্দুল মান্নানকে জমিটি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছেছে। কিন্তু তিনি কথা শোনেনি।”

জেলা প্রশাসক মো.আব্দুল আওয়াল বলেন, “স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়টি আমরা মনে নেই। কেউ যদি জমি দখল করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”