বজ্রপাতে সারাদেশে ১৬ জনের মৃত্যু

বজ্রপাতে সারাদেশে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে; আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও তিনজন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2017, 12:49 PM
Updated : 9 May 2017, 05:24 PM

মঙ্গলবার ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে হতাহতের এসব ঘটনা ঘটে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

গোপালগঞ্জ

সদর উপজেলার নিজড়া বটবাড়ি গ্রামের আকরাম খন্দকারের ছেলে শামীম খন্দকারের (২৬) মৃত্যুর খবর দিয়েছেন বৌলতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই ফরিদুজ্জামান।

তিনি বলেন, শামীম বিকালে বৃষ্টির মধ্যে ধান কাটছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকি‍ৎসক মৃত ঘোষণা করেন।  

চাঁদপুর

চাঁদপুর সদর উপজেলায় বজ্রপাতে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও তিন জন।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের গোয়ালনগর ও উত্তর বলশাহি ঢালীকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হযরত আলী বেপারী জানান।

এরা হলেন ঢালীকান্দি গ্রামের দুলাল সরদারের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪০) ও তাদের ছেলে ইয়াসিন সরদার (১৫)।

আহতদের চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, দুপুরে বৃষ্টি শুরুর সময়ন সেলিনা বাড়ির পুকুরে হাতমুখ ধুয়ে ছেলে ইয়াসিনকে নিয়ে ঘরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে মা-ছেলে গুরুতর আহত হয়।

“তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

আর বাড়ির আঙিনায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে গোয়ালনগর গ্রামের ওই তিন আহত হন বলে জানান তিনি।

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রায়হান আহমেদ বলেন, বজ্রপাতে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু ও কালীগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

এরা হলেন হরিণাকুণ্ডুর পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ইউনুস আলির ছেলে মিরাজ হোসেন (৫০) ও আমেরচারা গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে মো.আমানুল্লাহ (৪০) ও কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রামের মো. ফসিয়ার রহমানের স্ত্রী আঞ্জুরা বেগম (৪৫)।

হরিণাকুণ্ডু থানার এসআই শাখাওয়াৎ হোসেন জানান, বেলা আড়াইটার দিকে ঝড় বৃষ্টির সময় মাঠে কাজ করছিলেন মিরাজ ও আমানুল্লাহ। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

আঞ্জুরা বেগমের ভাই শরিফুল ইসলাম বলেন, তার বোন বাড়ির পাশ ধান উঠাচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীণগরে বজ্রপাতে খোদেজা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে নবীনগর থানা পুলিশের ওসি আসলাম শিকদার জানান।

খোদেজা ওই গ্রামের কবির মিয়ার স্ত্রী।

ওসি বলেন, দুপুরে ঝড়ের সময় বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে যাওয়া ছেলেকে ডেকে আনতে যান খোদেজা। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বজ্রপাতে আব্দুল মালেক (১২) নামে এক কিশোর মারা গেছে।

মালেক উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার রোকনুজ্জামান জানান, দুপুরে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয় মালেক। উদ্ধার করে দামুড়হুদা হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ সদর ও ধোবাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে দুইভাইসহ তিনজন নিহত হয়েছে।

এরা হলেন বজ্রপাতে নগরীর গোয়াইলকান্দা এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মাহমুদুল হাসান তামিম (১৫), ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দলিয়া ইউনিয়নের রাউতি গ্রামের আব্দুল মালেক মুন্সীর ছেলে এংরাজ মিয়া (৩২) ও আসাদ মিয়া (৩৫)।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, দুপুরে নগরীর জিলা স্কুল মাঠে খেলার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তামিমের মৃত্যু হয়।

ধোবাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজনু মৃধা বলেন, সকালে দুই ভাই বাড়ির পাশে একটি ক্ষেতে ধান কাটছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাতে একই সময় ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।

গাইবান্ধা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বজ্রপাতে নব চন্দ্র (২৭) নামে এক ভ্যান চালক মারা গেছেন।

দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের পিয়ারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশায়েদ হোসেন চৌধুরী বাবলু জানান।

নব চন্দ্র ওই গ্রামের প্রেমা চন্দ্রের ছেলে।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, দুপুরে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে নবচন্দ্র ভ্যান চালিয়ে কামদিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়

নড়াইল

নড়াইল সদর উপজেলায় মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে জুলফিকার হোসেন (৪২) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার পাইকমারি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

তিনি ওই গ্রামের সফিক উদ্দিনের ছেলে।

নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক প্রতীক বিশ্বাস জানান,জুলফিকারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়েছে।

নারাণয়গঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার বজ্রপাতে এক নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মরদাসাদী ও দুপ্তারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে আড়াইহাজার থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান।

এরা হলেন উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বড় মনোহরদী এলাকার মৃত আফাজউদ্দিনের ছেলে জামিল মিয়া (৪৫) ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী গ্রামের ইসমাইলের স্ত্রী সুবেদা বেগম (৩৫)।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি জানান, বেলা ১১টার দিকে দুপ্তারা এলাকায় বিলে বরশি দিয়ে মাছ ধরতে যার জামিল মিয়া। হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে।এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

মরদাসাদী মাঠের জমি থেকে কাটা ধান আনতে গিয়ে বজ্রপাতে সুবেদা বেগমের মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।

তবে অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অফিস সহায়ক আবু রায়হান রানা বলেন, উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তার মাধ্যমে তারা বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যুর তথ্য জেনেছেন।

এর মধ্যে একজনহবিগঞ্জের মুহাম্মদ রাকিব মিয়া (২৭) ও নারায়ণগঞ্জের সুবেদা বেগম।