মহেশপুরে নিহত এক ‘জঙ্গি’ পোড়াহাটির ধর্মান্তরিত আব্দুল্লাহ

ঝিনাইদহের মহেশপুরের ‘জঙ্গি আস্তানায়’ নিহত দুইজনের মধ্যে একজনকে পোড়াহাটির জঙ্গি আস্তানার সেই ধর্মান্তরিত মুসলমান আব্দুল্লাহ হিসেবে শনাক্ত করেছে তার পরিবার।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2017, 12:36 PM
Updated : 16 May 2017, 06:02 AM

সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের চৈতন্য বিশ্বাসের ছেলে প্রভাত কুমার নয় বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে আব্দুল্লাহ নাম নেন। গত ২০ এপ্রিল তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করলেও সে সময় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

গত ২৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আব্দুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ এর আগে ধারণা করলেও সোমবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে এসে মহেশপুরের বজরাপুর গ্রামের দুই জঙ্গির লাশ দেখে একজনকে আব্দুল্লাহ হিসেবে শনাক্ত করেন তার ভাই বিপুল কুমার বিশ্বাস।

ওই জঙ্গি আস্তানায় নিহত আরেকজন তুহিন বলে রোববার অভিযান চলার সময় জানিয়েছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহম্মেদ।

মহেশপুর থানার এসআই মো. খবির উদ্দিন জানান, তুহিন সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে। সোমবার তার মামা আমিরুল ইসলাম মর্গে এসে তার লাশ শনাক্ত করেন।

এসআই খবির বলেন, “ওই জঙ্গি আস্তানায় গুলি ও আত্মঘাতী বোমায় দুজনের মৃত্যু হয়। স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করলেও নিতে রাজি হননি। ময়নাতদন্ত শেষে সেগুলো আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে দাফনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

রোববার ভোর থেকে বজরাপুর গ্রামের ওই একতলা একটি টিনশেড বাড়ি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে অভিযান চালায়, তার নাম দেওয়া হয় অপারেশন ‘সাটল স্প্লিট’। অভিযানে বাড়ির ভেতরে চারটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়, উদ্ধার করা হয় দুটি পিস্তল।

এদিকে এ ঘটনায় এসআই খবির উদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার সকালে মহেশপুর থানায় একটি মামলা করেন।

বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম, তার ছেলে জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে ওসি আহমেদ কবির চৌধুরী জানান।

লেবুতলায় অভিযানের সমাপ্তি

মহেশপুরের ওই বাড়িতে অভিযান শুরুর আগেই শনিবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে আরেক বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরু করেছিল জেলা পুলিশ ও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।

সোমবার দুপুরে ওই অভিযান শেষে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহম্মেদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ওই বাড়ি থেকে আটটি বোমা ও একটি পিস্তল উদ্ধার করেছেন তারা। কাউন্টার টেরোরিজমের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেছে।

সরাফত নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ওই বাড়িতে ছয় রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও বোমা তৈরির বৈদ্যুতিক সার্কিটও পাওয়া গেছে বলে জানান ডিআইজি।