প্রাথমিক পরীক্ষায় হাওরে বিপদজনক তেজস্ক্রিয়া মেলেনি

প্রাথমিক পরীক্ষায় সুনামগঞ্জে হাওরের পানিতে তেজস্ক্রিয়তার যে মাত্রা পাওয়া গেছে তা বিপদজনক নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধি দল।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2017, 06:48 AM
Updated : 23 April 2017, 11:32 AM

রোববার সকালে সদর উপজেলার দেখার হাওর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার হাওরের পানি পরীক্ষা করে দলটির প্রধান ও কমিশনের সদস্য (ভৌতবিজ্ঞান) দীলিপ কুমার সাহা এতথ্য জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “হাওরের পানিতে প্রাথমিকভাবে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং স্বাভাবিকভাবে যে ধরনের তেজস্ক্রিয়তার পরিবেশে থাকে তার চেয়ে অনেক কম রয়েছে।

“পরিবেশে স্বাভাবিকভাবে ০.২০ মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা থাকে। আর রেডিয়েশন সার্ভে মিটারে হাওরের পানিতে ০.০৯ মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া গেছে।”

এপ্রিলের শুরুতে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে বন্যার পাশাপাশি সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চলের সমস্ত বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর পানি বিষাক্ত হলে মাছ মরা শুরু হয় তারপর মরতে থাকে হাঁস।

গত বছরের শেষ দিকে সুনামগঞ্জ সীমান্তসংলগ্ন ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ে ইউরেনিয়ামের উন্মুক্ত খনিতে খনন শুরু হওয়ায় সেখান থেকে পানির ধারার সঙ্গে ইউরিনিয়াম মিশে হাওরে দূষণ সৃষ্টি করে থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর শঙ্কার কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

হাওরে মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যুর পেছনে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে শনিবার পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধি দল সুনামগঞ্জে পৌঁছায়। তারা হাওরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পানি, মরা মাছ, হাঁস, কচুরিপানা, সেডিমেন্ট সংগ্রহ করেন।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেবাশীষ পাল ও রসায়ন শাখার প্রধান ড. বিলকিস আরা বেগম প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।

পরে দেবাশীষ পাল বলেন, হাওর থেকে মরা মাছ ও পানির নমুনা ঢাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পানির র্দুগন্ধ ও মাছ মরে যাওয়ার কারণ নিশ্চিত করা যাবে।”

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হাওর সংলগ্ন জেলাগুলোর সিভিল সার্জনরা আগে থেকেই অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। সেখানে জনস্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকি এখনও দেখা দেয়নি।

রোববার ঢাকা থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি দল হাওর এলাকা পরিদর্শনে গেছে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, সেখানে বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন।