তার মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভির বলেছেন, “মামলার প্রধান আসামি এখনও গ্রেপ্তার হয়নি, এটা হতাশাজনক। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হলে আমারা একটু শান্তি পেতাম।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক রেজাউস সাদিক গত বছরের ৬ নভেম্বর পাঁচ জেএমবি সদস্যকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
তারপর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার প্রধান আসামি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে না পারায় এখনও অভিযোগ গঠন হয়নি বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসলাম হোসেন জানান।
তিনি ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন; ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও উপদেষ্টা ছিলেন।
অধ্যাপক রেজাউল ভালো সেতারও বাজাতেন। তিনি শালবাগানে একটি গানের স্কুল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন।
নিহতের ছেলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ পরদিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে বোয়ালিয়া থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে তদন্ত কর্মকর্তার ভাষ্য।
তার প্রতিবেদনে বলা হয়, “দেশব্যাপী ব্লগার ও প্রগতিশীল ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের অংশ হিসেবে জেএমবি সদস্যরা অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যা করে।”
তাদের মধ্যে মাসকাওয়াত আবদুল্লাহ, রিপন আলী, আবদুস সাত্তার ও রহমতুল্লাহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান।
আইনজীবী আসলাম বলেন, আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু করা হয়। কিন্তু প্রধান আসামি শরিফুল ইসলাম পলাতক থাকায় এখনও তা হয়নি।
এ অবস্থায় আদালত শরিফুলকে পলাতক দেখিয়েই তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু করতে পারে বলে জানান তিনি।
মামলার বিচার শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ এফ এম মাসউদ আখতার বলেন, “রেজাউল স্যারের হত্যাকাণ্ডের পর এক বছর হয়ে গেল। আমরা চাই দ্রুত বিচারকাজ শেষ হোক।”
তিনি জানান, রেজাউল হত্যার বিচার দাবিতে রোববার বিভাগ থেকে পদযাত্রা এবং ‘মুকুল মঞ্চে’ সমাবেশ করা হবে।
সমাবেশে বিভাগ থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন সংশপ্তকে অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী স্মরণে বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হবে।