সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বুধবার সকালে দুদকের তিন সদস্যের তদন্ত দল বৈঠক করেন।
পরে দপুরে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এছাড়া প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করবে বলে তদন্ত দলের প্রধান মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
অসময়ে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান তলিয়ে যায়। হাওরের বাঁধগুলো মেরামত ও নতুন করে নির্মাণে দুর্নীতির কারণেই এ ফসলহানি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এ দুর্নীতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের কার কী ভূমিকা, তা খুঁজে বের করতে গত বৃহস্পতিবার একটি কমিটি গঠন করা হয় বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।
“কিন্তু এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও অন্যান্যরা ঠিকাদারদের যোগসাজশে কোনো কাজ না করেই দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।”
অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন- উপ-পরিচালক মো. আবদুর রহিম ও সহকারী পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি।
“যদি কোন কাজে অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
এছাড়া প্রাথমিক তদন্তে প্রকল্প দীর্ঘায়িত করার অনিয়ম পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “একটা বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। সুনামগঞ্জে প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দেখা গেছে প্রকল্পগুলো টেনে নেওয়া হয়েছে।”
“এ অবস্থায় ঠিকাদারদের কাজ বাতিল না করে কাজের সময় বাড়ানো যথাযথ হয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে; প্রকল্প পরিদর্শন করে অনিয়ম পেলে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়ে সিলেটে হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়।
জেলার ১৪৫টি হাওরে প্রায় ৫৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হাশেম জানান।
‘হাওর অ্যাডভোকেসি’ নামে একটি সংগঠন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক পরিসংখ্যান উল্লেখ করে জানায়, এবার সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে এক লাখ ৭১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জেরই এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।