সদর উপজেলার কীর্তিপাশা বাজার এলাকায় সোমবার রাতে হামলার শিকার হন কীর্তিপাশা ইউনিয়নের গোবিন্দ ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়া।
এই শিক্ষকের অভিযোগ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন ও তার অনুসারীরা তাকে মারধর করছেন।
হামলায় দুই নারীসহ আরও তিনজন আহত হয়েছেন। এরা হলেন- কীর্তিপাশা বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাস, তার বোন রীনা দাস ও ভাইয়ের বউ অঞ্জনা দাস।
লতিফসহ চারজনকেই ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এসএম হাসান মাহামুদ বলেন, “আব্দুল লতিফের হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত লেগেছে।”
উত্তম দাসের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে ‘প্রভাব খাটাতে’ না পেরে উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান এই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক লতিফ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে জোর করে ‘চেয়ারম্যান সুলতানের’ গাড়িতে তুলে কীর্তিপাশা বাজার এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে।
“সেখানে উত্তম দাসের দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে আমাকে ও উত্তমকে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।”
ব্যবসায়ী উত্তম দাস বলেন, “আমাকে মারধরের এক পর্যায়ে আমার বোন রীনা ও ভাইয়ের বউ অঞ্জনা এগিয়ে গেলে সুলতানের লোকজন তাদেরও মারধর করেন।”
পরে ‘চেয়ারম্যানের’ গাড়িতে করে তাকে ও লতিফকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান উত্তম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান সুলতান হামলায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বহু মামলার আসামি লতিফ শিক্ষকতাকে পুঁজি করে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
“আমি আমার ইউনিয়নে মাদকসহ সব অপরাধের বিরুদ্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করায় নাখোশ হয়ে লতিফসহ একটি গ্রুপ আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। এ পরিকল্পনার কথা টের পেয়ে এলাকাবাসী লতিফসহ দুজনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করে।”
তাকে ‘হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে লতিফের সঙ্গে এক ব্যক্তির কথোপকথনের’ একটি ফোন রেকর্ড পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহে আলম বলেন, রাতে স্থানীয় লোকজন শিক্ষক লতিফ এবং উত্তমকে থানায় নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণ পর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন থানায় আসেন।
“তবে লতিফ ও উত্তমকে কে বা কারা মারধর করেছে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না,” বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের পক্ষে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান মাহে আলম। তিনি বলেন, অভিযোগের সপক্ষে একটি ফোনের রেকর্ড চেয়ারম্যান পুলিশকে দিয়েছেন।
স্কুল কমিটিতে প্রভাবে খাটানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সুলতান বলেন, “একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের একটি স্কুলের কমিটিতে প্রভাব খাটানোর প্রশ্নই ওঠে না।”
এটা তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ বলে দাবি করেন সুলতান।