গাইবান্ধা উপ নির্বাচনে ভোট চলছে

গুলিতে নিহত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের আসনে নতুন জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ভোটাররা। 

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2017, 03:17 AM
Updated : 22 March 2017, 04:04 AM

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, বুধবার সকাল ৮টায় নির্ধারিত সময়েই গাইবান্ধা-১ আসনের এই উপ নির্বাচন শুরু হয়। ১০৯টি কেন্দ্রে ভোট চলবে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে ভোটের শুরুতে কয়েকটি কেন্দ্রে উপস্থিতি কম দেখা গেলেও ইসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়বে।

এ আসনের এমপি হতে ভোটের লড়াইয়ে আছেন সাতজন।

তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মোস্তফা আহমেদ ‘নৌকা’ প্রতীক ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) শামীম হায়দার ‘লাঙ্গল’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এছাড়া জাসদের মোহাম্মদ আলী প্রামানিক ‘মশাল’, জাতীয় পার্টির (জেপি) ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশা ‘সাইকেল’, গণফ্রন্টের শরিফুল ইসলাম ‘মাছ’, এনপিপির জিয়া জামান খান ‘আম’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা মোহসিন ‘আপেল’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জে নিজ বাড়িতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য লিটন গুলিতে নিহত হলে আসনটি শূন্য হয়।

এক নজরে গাইবান্ধা-১

>> সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসন।

>> ১০৯টি ভোটকেন্দ্রের ৬৩৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ চলছে।

>> মোট ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৬ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৪১ জন নারী, আর পুরুষ ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৮৫ জন।

>> এ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন ১০৯ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৬৩৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও এক হাজার ২৭৪ জন পোলিং অফিসার।

এই উপ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, “সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে ৫৪টি কেন্দ্র। তাছাড়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে ১৫টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে।”

সকাল সোয়া ৮টায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের বাজারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতি তেমন নেই। সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত ধোপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সোয়া ৯টা পর্যন্ত বজরা হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দেখা যায় একই চিত্র।

ধোপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বেলাল হোসেন জানান, তার কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৮৮৯ জন। কিন্তু সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন মাত্র ১৯ জন।

বজরা হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের কিছু দূরে বোরো ধানের জমিতে কাজ করতে থাকা মকবুল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কাম থ্যাকি উঠি ভোট দিবার যামু।”

তবে বাজারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশেই এক বাড়ির বাসিন্দা আরজু আরা বেগম জানান, তিনি ভোট দিতে যাবেন না।

কেন ভোট দেবেন না জানতে চাইলে পঞ্চাশোর্ধ্ব এই নারী বলেন, “ভোট দিয়ে কি হবে?”

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, “শঙ্কার কোনো কারণ নেই। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

ভোটকেন্দ্রে পাঁচ স্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চার সহস্রাধিক সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ দল সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন বলে পুলিশ সুপার জানান।

এছাড়া সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে বলে জানান তিনি।