ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে একাট্টা ২ উপজেলার আ. লীগ

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ন-দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2017, 08:24 AM
Updated : 20 March 2017, 08:25 AM

তবে ডেপুটি স্পিকারের পক্ষে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশীল আরেফিন বলেন, “গত ১৭ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গেলে ডেপুটি স্পিকারের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালান।

“তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেছ আলী প্রধানের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে মারধর করেন।”

ওয়ারেছ আলীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাইবান্ধা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে সামশীল আরেফিন বলেন, “ডেপুটি স্পিকার ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি পুরাতন দলীয় সহযোগী ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এমনকি সরকারের সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন।”

সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিন্ডিকেটের সদস্যদের সভাপতি করে ‘কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ’ করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, এমনকি মসজিদ-মন্দির, ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থানের সংস্কার ও জেলা পরিষদ থেকেও কোটি কোটি আত্মসাৎ করছেন ডেপুটি স্পিকার।”

নির্বাচনের মাঠেও আওয়ামী লীগের ক্ষতি করার অভিযোগ তোলেন সামশীল আরেফিন।

“জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ শামস-উল আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতাউর রহমানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে তাকে বিজয়ী করতে সহায়তা করেছেন ডেপুটি স্পিকার।”

তিনি এসব ‘অনিয়ম-দুর্নীতি ও দুঃশাসনের’ বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানান।

সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম ও মোসলেম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মশিউর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকছেদুল ইসলাম, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম সেলিম পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক সুমন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম জাভেদ ও মাহমুদ হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মামুন মিয়া তাদের বক্তব্যে একই অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তার একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী তৌফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ১৭ মার্চ আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গেলে তারা আমাদের লোকজনের ওপর চড়াও হয়। তারাই লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের লোকজনকে মারধর করে।”

অনিয়ম-দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা সব সময় স্যারের নেগেটিভ সাইডটা বলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন।”