ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল কেরানীগঞ্জের দুই সেতুতে

ঝুঁকি নিয়ে পারাপার চলছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার দুটি সেতুতে।

আসাদুজ্জামান সুমন কেরানীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2017, 12:23 PM
Updated : 5 March 2017, 12:23 PM

ঢাকা-নবাবগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ব্রাহ্মণকিত্তা গঁদাবাগ সেতু ও শাক্তা বেইলি সেতুর প্রশস্ততা কম ও খারাপ দশা থাকা সত্ত্বেও ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ করা হয়নি।

ফলে ঝুঁকি ও আতঙ্ক নিয়ে চলছে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহন।

এপথে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব অনেক কম হওয়ায় দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, সিরাজদিখান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলাসহ অনেক এলাকার বাসিন্দারাই প্রতিনিয়তই এ আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতু দুইটির প্রশস্ততা কম থাকায় দুইটি যানবাহন একসঙ্গে সেতুর উপর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে না। এক পাশ দিয়ে যানবাহন আসতে থাকলে আরেকপাশে অপেক্ষায় থাকতে হয়।

ব্রাহ্মণকিত্তা গঁদাবাগ সেতুটি অনেক পুরনো ও দুই পাশের রেলিংয়ের বেশিরভাগ ভেঙেঝুলে আছে। আর শাক্তা স্টিলের টানা সেতুটি যানবাহনসহ এ পর্যন্ত দুবার ভেঙে পড়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক বছরে ঢাকা দক্ষিণের দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ উপজেলায় আঞ্চলিক সড়কের প্রায় সবকয়টি সেতু ভেঙে পুনর্নির্মাণকারা হলেও ব্রাহ্মণকিত্তা গঁদাবাগ সেতু ও শাক্তার বেইলি সেতুটি করা হয়নি।

দুই সেতুতে প্রায় সময় যানজট লেগে থাকায় ও যেকোনো সময় যানবাহনসহ ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

ব্রাহ্মণকিত্তা গঁদাবাগ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ দাশ (৬৫) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেতুটি অনেক পুরনো। যখন এ আঞ্চলিক সড়কটি করা হয়েছিল তখন খালের উপর এ ব্রাহ্মণকিত্তা গঁদাবাগ সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

“সেতুটি ভেঙে পুনর্নির্মাণ তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত একবার মেরামতও করা হয়নি।”

ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটির প্রশস্ততা কম থাকার কারণে পাশাপাশি দুইটি যানবাহন একসঙ্গে আসা যাওয়া করতে পারে না। এতে প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকে।

“বেশ কয়েক বছর যাবৎ সেতুটির এ দশা ও দুপাশের রেলিংয়ের বেশিরভাগ অংশ ভেঙে ঝুলে আছে। তারপরও দেখার কেউ নেই।”

শাক্তা বেইলি সেতুর পাশের মুদি দোকানি মো. তাজুল ইসলাম (৬০) বলেন, “সেতুটি অনেক পুরনো। যখন এ আঞ্চলিক সড়কটি করা হয়েছিল তখন খালের উপর এ টানা স্টিলের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ পর্যন্ত সেতুটি দুবার যানবাহনসহ ভেঙেপড়েছে।

নবাবগঞ্জের বাসিন্দা কমল সাহা। ঢাকায় একটি কোম্পানিকে চাকরি করেন।

তিনি বলেন, সেতু দুইটির যানজটের ভয়ে সকালে এক ঘণ্টা আগে বাড়ি থেকে বের হই। তারপরও সেতু দুইটিতে জ্যাম থাকার কারণে অনেক সময় অফিসে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়।”

কেরানীগঞ্জের আমিরাবাগের বাসিন্দা এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. রাকিব বলেন,“সিএনজি অটোরিকশায় আমিরাবাগ থেকে আমার পরীক্ষা কেন্দ্র রামেরকান্দায় পৌঁছাতে সর্বোচ্চ সময় লাগে আধা ঘণ্টা। দুই সেতুতে প্রায় সময় যানজট লেগে থাকে বিধায় সকাল ৯টার পরিবর্তে সকাল ৮টায় পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে আগে থেকেই বলে রেখেছিলবাবা।

“ওই দুই সেতুতে জ্যাম থাকার কারণে সকাল ৮টায় রওনা দিয়েও অনেক পরীক্ষায় কেন্দ্রে পৌঁছে দেখি খাতা দিয়ে দিয়েছে। এতে করে প্রত্যেক পরীক্ষায় আতঙ্কের মধ্যে থেকে বাড়ি থেকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়েছে।”

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ্জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রী ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সেতু দুইটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

“তবে বিষয়টি এখন কী পর্যায়ে আছে সেটি আমার জানা নেই।”