মঙ্গলবার বিকালে মাগুরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঢাকার দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বাবুল আক্তার ও তাকে জড়িয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কোনো ভিত্তি নেই।
গত বছরের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে সন্তানের সামনে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে। এরপর নানা ঘটনার মধ্যে বাবুল আক্তার পুলিশের চাকরি ছাড়েন।
পুলিশ প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য জঙ্গিদের সন্দেহ করলেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্তের কথা জানায়।
সম্প্রতি বর্ণির শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাবুল আক্তারের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ করেছেন বলে কয়েকটি দৈনিকে খবর প্রকাশ হয়।
এক সন্তানের মা বর্ণির স্বামী পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহে ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত হন।
তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, বর্ণির সঙ্গে সম্পর্কের কারণে আকরামকে হত্যা করে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
সেই সম্পর্কের জের ধরেই মিতু খুন হয়ে থাকতে পারে বলে বর্ণির এক ননদ অভিযোগ করেছেন বলে গণমাধ্যমের খবর।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে বর্ণি বলেন, তার শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা এবং ঢাকার মগবাজারে তার মেয়ের নামে কেনা তার স্বামীর ফ্ল্যাট দখল করতেই ননদরা এই মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। ২০১৫ সালে ১৩ জানুয়ারি তার স্বামী ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত হওয়ার পর ননদ জান্নাত আরা রিমি প্রথম এক ফুফাত ভাইকে জড়িয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।
ওই সময়ও মাগুরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ করেছিলেন বলে জানান তিনি।
ননদ জান্নাত আরা রিমি এখন বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে একই ধরনের অভিযোগ আনছেন এবং এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক বলে দাবি বর্ণির।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পুলিশের চাকরি ছাড়ার পর বাবুল আক্তার মগবাজারে আদ-দ্বীন হাসপাতালে চাকরি নিয়ে ওই এলাকায় বাসা নিয়েছেন, তার কাছাকাছিই থাকতেন বর্ণি। কয়েক মাস আগে তিনি মাগুরায় গিয়ে বাবুলদের বাড়িতে উঠেছেন বলে ননদ রিমির অভিযোগ।
মাগুরা প্রেস ক্লাবে এ সময় বর্ণির মেয়ে ও মা শিরিনা বসির উপস্থিত ছিলেন।
শিরিনা বসির বলেন, “সড়ক দুঘটনায় আমার মেয়েজামাই পুলিশ কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের মৃত্যুর পর তার বোন জান্নাত নানাভাবে আমার মেয়েকে হয়রানি করছে। ফুফাত ভাই সাদিমুল ইসলাম মুনের সঙ্গে সম্পর্কের অপবাদ দিয়েছে।
“এমনকি জামাই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেও পরকীয়ার কারণে বর্ণি তাকে হত্যা করিয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। যে কারণে পুলিশ বিভাগে স্বামীর প্রাপ্য টাকা সে পায়নি।”
বাবুল আক্তারের পরিবারের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন শিরিনা। বাবুল আক্তারকে তারা কোনোদিন দেখেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুরা শহরের বসবাসকারী এসপি বাবুল আক্তারের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান লাবু বলেন, “বর্ণি নামে কোনো মেয়ে কখনও আমাদের বাড়িতে থাকেনি। আমার পরিবারের কেউ তার চেনাজানাও নয়। দুয়েকটি পত্রিকায় তাকে জড়িয়ে যে রিপোর্ট ছাপা হয়েছে তার বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।
“আমরা প্রকাশিত ওই মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে একটি পত্রিকায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। অন্যটি কাল বুধবার পাঠাব।”
বাবুল আক্তারের বাড়ি মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায়। সেখানে তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ, মা, ছোট ভাই হাবিবুর রহমান লাবু ও তার স্ত্রী থাকেন।
বর্ণি ও বাবুলের দুই স্বজন দুই পরিবারকে না চেনার কথা বললেও ২০১৫ সালে মাগুরা প্রেস ক্লাবে বর্ণি যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেখানে বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনের একটি ছবি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে থাকার কথা জানালে বর্ণি বলেন, মাগুরার মহম্মদপুরে তার বাবা চাকরি করতেন। ওই সময় বাবুল আক্তারের বাবার সঙ্গে তার বাবার পরিচয় হয়।
“দুই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার কথা ভুলে বলা হয়েছে।”