ব্লগার অনন্ত হত্যা: সম্পূরক অভিযোগপত্রে ফারাবী

সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় দাখিল করা সম্পূরক অভিযোগপত্রে ‘উগ্রপন্থি ব্লগার’ সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমানের নাম যুক্ত করেছে সিআইডি।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2017, 08:02 AM
Updated : 5 Feb 2017, 08:59 AM

আদালতের নির্দেশে এই মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী ধারা যুক্ত করে গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকা সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার জিআর শাখায় সম্পূরক অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

সিলেট আদালতে পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্পূরক অভিযোগপত্রটি আদালতে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পূরক অভিযোগপত্রের সঙ্গে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন ২০১৩-এর ৪০ ধারায় অনুমোদনের জন্যও এর মধ্যে আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী বলেন, সম্পূরক অভিযোগপত্রে শুধু সিলেটের রিকাবিবাজারের বাসিন্দা ফারাবীর নামই নতুন করে যুক্ত হয়েছে। বাকি পাঁচজন আগে থেকেই আসামি ছিলেন।

বাকিরা অভিযোগপত্রভুক্ত বাকিরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার ফালজুর গ্রামের আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমেদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিরেন্দ্রনগর গ্রামের হারুন অর রশিদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহি ওরফে ইবনে মইন (২৪) ও ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশিদ আহম্মেদ (২৪)।

এদের মধ্যে আবুল, ফয়সাল ও হারুন পলাতক এবং বাকিরা তিন জন কারাগারে রয়েছেন।

গত বছরের ২৮ অগাস্ট পরিদর্শক আরমান পাঁচজনকে আসামি করে একই অভিযোগপত্র জমা দিলে তাতে ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় আদালত।

পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদুল জানান, অন্তত হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া ফটো সাংবাদিক ইদ্রিস আলীসহ ১০ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

বাকিরা হলেন -কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের মোহাইমিন নোমান, ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মো. সাদেক আলী ওরফে মিঠু, মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান ওরফে গামা, আমিনুল মল্লিক, জাকিরুল্লাহ রফে হাসান, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আহসান, জুলহাস বিশ্বাস, মো. জাফরান হাসান ও আবুল বাসার।

কে এই ফারাবী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কালী শ্রী পাড়ায় ফারাবীর বাড়ি। সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারের মুন্সিপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে মাকে নিয়ে থাকতেন তিনি।

ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগে ২০১৫ সালের ২ মার্চ ফারাবীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সিলেট থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যান। পরে অনন্ত হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদ বাজারে নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অনন্ত বিজয় দাশকে। 

হত্যার একদিন পর তাঁর বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

আনসার বাংলা-৮ নামের একটি সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। আর তদন্তের এক পর্যায়ে লেখক অভিজিৎ রায় হত্যায় গ্রেপ্তার কয়েকজনকে অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় দুই হত‌্যাকাণ্ডের পেছনে একই দল রয়েছে।

প্রথমে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে মামলাটির তদন্তভার সিআইডি-র অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।