রিপনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করতে রোববার নির্দেশ দিয়েছে সিলেটের একটি আদালত। এই মামলায় দোষি সাব্যস্ত হলে নিজের দণ্ডই খাটতে হবে তাকে।
রিপন একটি হত্যামামলার আসামি ইকবাল হোসেন বকুলের হয়ে দুই বছর ধরে সাজা খাটছিলেন বলে বিচার বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
এই প্রতারণার জন্য রিপনের সঙ্গে আসামি বকুলের ভাই ও শামীম আহমেদ, আইনজীবী শাহ আলম এবং বিআরটিএ অফিসের দালাল লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধেও মামলা করতে জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ওই তদন্ত কমিটির প্রধান সিলেটের মুখ্য বিচারিক হাকিম কাজী আব্দুল হান্নান জানান, জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাঠোয়ারী তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতারণার এই মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।
আইনের সঙ্গে প্রতারণা করায় আইনজীবী শাহ আলম ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে আইনজীবী সমিতিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেইসঙ্গে রিপনকে হত্যামামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে মূল আসামি ইকবাল হোসেন বকুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আদালত চত্বর এবং জেলা প্রশাসন অফিসের আশেপাশে থাকা দালালদের নির্মূল করতে জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য সংস্থাকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর রিপনের বিষয়টি তদন্তে সিলেটের মুখ্য বিচারিক হাকিম কাজী আব্দুল হান্নানকে প্রধান করে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়। গত মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
টাকার বিনিময়ে রিপনের জেলে যাওয়ার বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানান তদন্ত কমিটি প্রধান আব্দুল হান্নান।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিপন টাকার লোভে স্বেচ্ছায় বদলি সাজা ভোগ করছেন। তাকে প্ররোচিত করেন অন্য তিনজন।
সিলেটের সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের আলোচিত আলী আকবর সুমন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বকুল, যার হয়ে সাজা খাটছিলেন ভুট্টো।
মূল আসামি বকুল বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছেন বলে জানান হাকিম আব্দুল হান্নান।
২০১২ সালের ২০ জুন সুমন হত্যা মামলার রায় দেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ। মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত নয় আসামির মধ্যে বকুলসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বকুল (২৬) সদর উপজেলার হাউসা গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে। তার সঙ্গে দণ্ডিত অন্য দুজন দরাছ মিয়া ওরফে গয়াছ (৩৪) ও তার স্ত্রী রুজিনা বেগমও (৩২) একই গ্রামের।