জাফর ইকবালের পরিচালনায় ‘সবচেয়ে বড়’ ক্লাসের রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ

তিন হাজার ২০০ ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে হতে যাচ্ছে স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবহারিক ক্লাস।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিশাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ওবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2017, 03:12 PM
Updated : 11 Jan 2017, 07:40 AM

‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবহারিক ক্লাস’ হিসেবে এই ব্যবহারিক ক্লাসটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হবে এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে জানিয়েছেন এই ক্লাসের আয়োজক কুলিয়ারচর উপজেলার ইউএনও উর্মি বিনতে সালাম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বেলা ১১টায় কুলিয়ারচর থানার মাঠে হতে যাওয়া এই ব্যবহারিক ক্লাসে কুলিয়ারচর উপজেলার পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির তিন হাজার ২০০ ছাত্রছাত্রী অংশ নেবে।

আর বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ক এই ব্যবহারিক ক্লাসটি পরিচালনায় থাকছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

ক্লাস পরিচালনায় অধ্যাপক জাফর ইকবালকে সহায়তা করবেন কুলিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ক ৮০ জন শিক্ষক।       

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞান বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবহারিক ক্লাস আয়োজনের কৃতিত্ব অস্ট্রেলিয়ার।

গত বছরের ১৬ অগাস্ট দেশটির জাতীয় বিজ্ঞান সপ্তাহ উপলক্ষে কুইন্সল্যান্ডে একসঙ্গে দুই হাজার ৯০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক ব্যবহারিক ক্লাসের আয়োজন করে এই রেকর্ড নিজেদের করে নেয় তারা।

এবার বাংলাদেশে হতে যাওয়া বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবহারিক ক্লাসটিকে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত করতে গিনেস কমিটির কাছে গত বছরের ৪ এপ্রিল আবেদন করা হয়েছিল বলে জানান কুলিয়ারচরের ইউএনও উর্মি বিনতে সালাম।

তিনি বলেন, “কমিটি গত ১৪ নভেম্বর এই আবেদন গ্রহণ করে। এতে করে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের নাম গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে।”

আয়োজকরা জানান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ব্যবহারিক ক্লাসটির জন্য ইতোমধ্যে কুলিয়ারচর থানার মাঠে ২৪৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৭২ ফুট প্রস্থের একটি অস্থায়ী ক্লাসরুম তৈরি করা হয়েছে। পুরো স্থানটি ১০ ফুট উচ্চতার সাদা কাপড়ে ঘিরে সেখানে ২১টি এলইডি স্ত্রিন বসানো হয়েছে।

ক্লাসে অংশ নিতে যাওয়া তিন হাজার ২০০ ছাত্রছাত্রীর মধ্য থেকে প্রতি দুইজনকে নিয়ে থাকবে একটি গ্রুপ। তাদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বেঞ্চের।

দুই পর্বে ভাগ করা এই আয়োজনের প্রথম পর্বে হবে দেড় ঘণ্টার ব্যবহারিক ক্লাস এবং দ্বিতীয় পর্বে থাকবে আলোচনা সভা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ব্যবহারিক ক্লাসটি পরিচালনার বিষয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিজ্ঞান শিক্ষার এই ব্যবহারিক ক্লাসে ৩২০০ ছাত্রছাত্রী উপস্থিত থাকবে। দেশে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে আছে, সুতরাং এটা একটা আনুষ্ঠানিক ব্যাপার।

“যদিও এটা ছোট ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞানে আগ্রহ বাড়াবে, তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো এটা দেশে বিজ্ঞান শিক্ষায় একটা নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।”