সরকার কঠোর অবস্থানে: ওবায়দুল কাদের

‘সংখ্যালঘুদের’ উপর হামলা হলে দলের কোনো নেতাকর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2016, 01:02 PM
Updated : 16 Nov 2016, 01:02 PM

নাসিরনগরে হিন্দুমন্দির ও বাড়িঘরে ভাংচুর-লুটপাট, গাইবান্ধায় সাঁওতালদের উচ্ছেদের ঘটনায় দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বুধবার কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের’ উপর হামলার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান কঠোর ও কঠিন। এ ঘটনার সাথে এমপি, মন্ত্রী, স্থানীয় প্রতিনিধি, আওয়মী লীগের দলীয় বা দলের বাইরে যেই জড়িত হোক না কেন, তাকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে না। দেখা হবে তার অপরাধটাকে। অপরাধটাকে দায়ী করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“যারা সংখ্যালঘুদের বাড়ি, মন্দিরে হামলা চালাবে শাস্তি তাদের পেতেই হবে।” 

আওয়ামী লীগের দুজন সাংসদ কারাগারে এবং তিনজন মন্ত্রী দুদকের মামলায় বিচারের মুখোমুখি বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর বিষয়ে কাদের বলেন, কয়েকজন স্থানীয় লোকের উপর আক্রোশ থাকায় সাঁওতালরা খাবার নিচ্ছিল না। তাদের বাদ দিয়ে আজ থেকে ‘সরকারিভাবে’ সাঁওতালদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিন সাঁওতাল নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, পুলিশ মামলা নেয় না, “আমরা বলে দিয়েছি মামলা নেওয়ার জন্য। কেন মামলা নেবে না, মামলা নিতে হবে।”

বিএনপির প্রেস ব্রিফিং সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি প্রেস বিফ্রিং সীমাবদ্ধ দল। তাদের ঘরেই গনতন্ত্র নেই, তারা গণতন্ত্র রক্ষার অভিযানের নামে তামাশা করে।

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, লন্ডন থেকে সিগন্যাল আসার পর সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হতে সম্মেলন শেষে এক সপ্তাহ সময় লেগেছে। তার পক্ষে যে কোনো কথা বলা সহজ। তার দলেই গণতন্ত্র নেই, তিনি দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন কেমন করে।

দুপুরে কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান প্রমুখ।

ফেইসবুকে ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুমন্দির ও বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও বেশকিছু মন্দিরে মূর্তি ভাংচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে।

এর এক সপ্তাহের মধ্যে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের শ্রমিক-কর্মীচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষের সময় পুলিশ গুলি চালায়। এতে তিন সাঁওতাল নিহত ও অনেকে আহত হন। ওই ঘটনায় পুলিশ সাঁওতালদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও হতাহতের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

গত সোমবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ত্রাণ নিয়ে গেলে সঁওতালরা ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।