সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে তার মেয়ে শাহপার শারমীন সুমি জানান।
হেদায়েত হোসেন (৮৩) ভাষা আন্দোলনের সময় কিশোরগঞ্জ মহুকুমার সর্ব দলীয় ভাষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন তিনি।
মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এক বছর আগে তার স্ত্রী ও এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
মেয়ে শারমীন সুমি জানান, “বিকালে মোহাম্মদপুর এলাকায় আমার বাসায় তিনি হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে লালমাটিয়ায় সিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের শহিদী মসজিদে নামাজে জানাযা শেষে হয়বতনগর সাহেববাড়ি গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানান শারমীন।
হেদায়েত হোসেনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ শহরের ফিসারি রোড এলাকায়।
ভাষা আন্দোলনের সময় হেদায়েত হোসেন ছিলেন স্থানীয় গুরুদয়াল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সে সময় তিনি কিশোরগঞ্জ মহুকুমার সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষা জীবন শেষে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং জেলা তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
হেদায়েত হোসেনের সহযোদ্ধা ভাষা সৈনিক আ. ফ. ম শামছুল হুদা বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই জেলা প্রশাসন থেকে ভাষা সৈনিকের সম্মাননা পেয়ে আসছিলেন হেদায়েত হোসেন। কিন্তু গত তিন বছর বছর আগে হঠাৎ করেই অজ্ঞাত কারণে তার নাম ভাষা সৈনিকের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সংবাদকর্মীসহ পরিচিতজনদের কাছে তিনি এ নিয়ে প্রায়ই কষ্ট ও অপমানবোধের কথা প্রকাশ করতেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও করা হয়েছে।