শোলাকিয়ায় এবার নামাজীর চেয়ে নিরাপত্তারক্ষী বেশি

ঈদুল ফিতরে জঙ্গি হামলার কারণে আতঙ্কের সঙ্গে বিরূপ আবহাওয়াও যোগ হওয়ার পর এবার কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক কম।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2016, 07:55 AM
Updated : 13 Sept 2016, 07:56 AM

কড়া নিরাপত্তার মধ‌্যে মঙ্গলবার সকালে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত হিসেবে পরিচিত শোলাকিয়ায় নামাজ সুষ্ঠুভাবেই শেষ হয়েছে।

নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ঈদুল ফিতরে যেতে না পারলেও এবার আবার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। নামাজের পর হাজার খানেক মুসল্লি এক সঙ্গে হাত তুলে দেশ ও মানুষের জন‌্য দোয়া করেন।

অন‌্যবার মাঠ ভরে গেলেও এবার সকাল ৯টায় নামাজের সময় মাত্র কয়েকটি কাতার হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস‌্যদের উপস্থিতিই বেশি করে চোখে লাগছিল সবার।

দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের সুবিধার জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব‌্যবস্থা এবারও ছিল। একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং আরেকটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছে। তবে যাত্রী ছিল খুব কম।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বারের ঘটনার আলোকে নিরাপত্তার জন‌্য এবার যথেষ্ট বন্দোবস্ত করা হয়। তবে টানা বৃষ্টি থাকায় মানুষের উপস্থিতি ছিল কম।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “কোরবানির আনুষ্ঠানিকতার কারণে ঈদুল আজহায় এমনিতে মুসল্লি কম হয়। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে এবার আরও কম হয়েছে।”

ঈদুল ফিতরে ময়দানের কাছেই পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। তাতে দুই পুলিশ সদস‌্য নিহত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এক হামলাকারী মারা পড়েন। গোলাগুলির সময় এক গৃহবধূও মারা যান।

সেই কারণে এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহার নামাজ নির্বিঘ্ন করতে ব‌্যাপক প্রস্তুতি ছিল। এই প্রথম এখানে নিরাপত্তার জন‌্য বিজিবি সদস‌্যদের মোতায়েন করা হয়। 

তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে তিন প্লাটুন বিজিবি সদস‌্যের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর হাজারের মতো সদস্য মাঠ ও এর আশপাশে বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করে। সাদা পোশাকেও ছিলেন অনেক পুলিশ সদস‌্য।

র‌্যাব ও এপিবিএন এর সদস্যরাও বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “ঈদুল ফিতরের দিনে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবারের ঈদুল আজহার জামাতকে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ রাখাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”