মঙ্গলবার বিকালে বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মধ্য বাগাদী গ্রামে নিজ বাড়িতে ওড়নায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সাথী আক্তার (১৪)। দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন শেখের তিন মেয়ের মধ্যে সাথী মেজ। সে বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ওই ঘটনায় সোমবার রাতেই সাথীর বাবা দেলোয়ার হোসেন আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে চার শিক্ষককে আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
আসমিরা হলেন বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন, সহকারী শিখ্ষিকা ফাতেমা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাকিল।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, পরীক্ষার ফি পরিশোধ না করায় আগের দিন বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন সাথীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এতে অপমানিত হয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।
জেলা প্রশাসক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাথীর পরিবারকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেন।
জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, এ ঘটনা তদন্তে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ানের নেতৃত্বে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. সফিউদ্দিন ও সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হককে সদস্য করে কমিটি করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ওসি মো. ওয়ালী উল্যাহ জানান, সদর উপজেলার বাগড়া বাজার এলাকা থেকে শিক্ষক আলাউদ্দিনকে আটক করা হয়। তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
“মামলাটি তদন্তের জন্য এসআই মাহবুব মন্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
সাথীর মা শায়লা বেগম জানান, পরীক্ষার ফি পরিশোধ না করায় গত রোববার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন তার মেয়েসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রোদের মধ্যে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন।
সোমবার সকালে সাথী পরীক্ষার ফিসের বকেয়া ৮০ টাকা চাইলে তিনি তা জোগাড় করতে বাড়ির অন্য মানুষের কাছে যান। এ সময় সাথী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানান তিনি।
সাথীর বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, স্কুলের মাসিক বেতন ও পরীক্ষার ফিসহ ছিল ৪শ’ টাকা। এর মধ্যে ৩২০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। বকেয়া ৮০ টাকার জন্য সাথীকে সাজা দিয়েছিলেন শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন।
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে জানাজা শেষে সাথীকে দাফন করা হয়েছে।