জুলিয়েট ও পিলপিলের ঘরে ৪৭ নতুন মুখ

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে লবণ পানির কুমির ‘জুলিয়েট’ ও ‘পিলপিলের’ ডিম থেকে ৪৭টি ছানার জন্ম হয়েছে।

অলীপ ঘটক বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2016, 10:51 AM
Updated : 14 August 2016, 10:51 AM

রোববার সকালে কুমির প্রজনন কেন্দ্রে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় পিলপিলের ২৭টি ও জুলিয়েটের ডিম থেকে ২০টি ছানার জন্ম দেওয়া হয়।

প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুমির বিশেষজ্ঞ আব্দুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিলপিল ৮৫ দিন আগে ৪৮টি এবং জুলিয়েট ৫০টি ডিম দেয়।

“এ ডিম সংগ্রহ করে পৃথকভাবে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় রোববার সকালে পিলপিলের ডিম থেকে ২৭টি এবং জুলিয়েটের ডিম থেকে ২০টি সুস্থ বাচ্চা জন্ম নেয়।”

ভ্রুণের মৃত্যু ও অনিষিক্ত হওয়ার কারণে এবার দুজনের ৫১টি ডিম নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কারনে ডিম ফুটে বের হওয়া বাচ্চার আশি শতাংশ নারী এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কুমির বলেও জানান এ কুমির বিশেষজ্ঞ।

আব্দুল মান্নান জানান, ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত আট বার জুলিয়েট এবং পিলপিল এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ডিম দেয়।

কুমির ছানাগুলোকে ৩৬ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পর নির্ধারিত (চৌব্চ্চা) জলাশয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, “জুলিয়েট ও পিলপিলের ডিম থেকে গত দশ বছরে ৪০৩টি বাচ্চা ফুটেছে। এর মধ্যে ১০১টি ছানা বঙ্গবন্ধু, ডুলাহাজরা সাফারি পার্কসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীখালে অবমুক্ত করা হয়েছে। আর ৩০২টি ছানা করমজলে রয়েছে।” 

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় লবণ পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয় এ কুমির প্রজনন কেন্দ্র।

সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে জেলেদের জালে আটকা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির নিয়ে কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানান তিনি।

কেন্দ্রে বর্তমানে লবণ পানির প্রজাতির (সল্ট ওয়াটার ক্রোকোডাইল) দুটি মেয়ে কুমির এবং একটি পুরুষ কুমির রয়েছে।পরিচর্যাকারীরা এদের নাম দিয়েছে পিলপিল, জুলিয়েট ও রোমিও।

এদের মধ্যে পিলপিলের বয়স ১৯, জুলিয়েট ও রোমিওর বয়স ২৮ বছর।

এ ছাড়া কেন্দ্রে ভারত থেকে আনা মিঠা পানির প্রজাতির (মার্শ ক্রোকোডাইল) দুটি মেয়ে কুমিরও রয়েছে। এদের বয়স কুড়ি বছর করে।

এছাড়া ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার জলোচ্ছ্বাসে করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে ছোট-বড় ৬১টি কুমির পানিতে ভেসে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাইরের কিছু বড় প্রাণী ১৮টি কুমিরের বাচ্চা খেয়ে ফেলে বলে জানান বন কর্মকর্তা সাইদুল।