সেই শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে পোস্টার

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয় ও তার আশপাশে পোস্টার দেখা গেছে। 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2016, 04:52 PM
Updated : 2 August 2016, 04:52 PM

ইসলাম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে নির্যাতনের শিকার নারায়ণগঞ্জের স্কুলশিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে তা বলতে পারছে না পুলিশ। এলাকাবাসীও বলছে না কারো নাম।

মঙ্গলবার সরেজমিনে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে স্কুলসহ আশপাশের এলাকার দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে অসংখ্য পোস্টার। যার, অনেক পোস্টারও ছেড়া।

‘পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণের’ নামে লাগানো এই পোস্টারে লেখা রয়েছে, “আল্লাহ রাসুলের কটূক্তিকারী ও মহামান্য হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ছাত্র নির্যাতনকারী পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের চাকুরি হতে বরখাস্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”

নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, কয়েকদিন আগে রাতের অন্ধকারে ‘প্রভাবশালী’ কেউ এসব পোস্টার লাগিয়েছে। এলাকাবাসীরা অনেক পোস্টারই ছিড়ে ফেলেছে।

গত গত ১৩ মে বন্দর উপজেলার কল্যান্দী এলাকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকে নির্যাতনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর সারাদেশে আলোচনার ঝড় রয়ে যায়। তাকে কান ধরিয়ে উঠবস করানোয় সমালোচনায় পড়েন স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানও।

ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে শারীরিক নির্যাতনের পর কান ধরিয়ে উঠবস করানো হয় সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে।

তুমুল আলোচনা এবং প্রশাসনের পদক্ষেপের পর শ্যামল কান্তি ভক্তকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সাত দিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গত ৯ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ প্রহরায় তাকে নগরীর নগর খানপুরের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ১২ জুন থেকে পুলিশের প্রহরায় তিনি স্কুলে যাওয়া শুরু করেন।

এরপর এমপিওভুক্তির জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক শ্যামলের বিরুদ্ধে মামলার আরজি নিয়ে আদালতে যান ওই স্কুলেরই ইংরেজির শিক্ষক মোর্শেদা বেগম। যা বন্দর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বিষয়টি নিয়ে বন্দর থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, “শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে নিয়ে পোস্টার লাগানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখব।”

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে গত ৩১ জুলাই থেকে ঢাকায় টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার।