বৃহস্পতিবার ব্রহ্মপূত্রের পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজীবপুর, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ কর্মকর্তা জানান।
বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। অনেকে গবাদিপশুসহ বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে।
উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ভাঙনে গুজিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও দাগারকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের মুখে রয়েছে।
“বন্যায় চর গুজিমারী, চর দাগারকুটি, বাবুর চর, চর গাবুরজান, নয়াডারা, শ্যামপুর, অনন্তপুর, হাতিয়া বকসী ও হাতিয়া ভবেশ গ্রাম প্লাবিত হয়ে ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।”
এখন পর্যন্ত সরকারি ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, বন্যায় ইউনিয়নের কালির আলগা, গোয়ালপুরী, রলাকাটা, বড়ুয়া, পোড়ারচর, চর ভগবতীপুর, চর পার্বতীপুর, গারুহারা, ফারাজীপাড়া, চর ঘনেশ্যামপুর, চর যাত্রাপুরসহ ১১টি চর পানিতে তলিয়ে গেছে।
নাগেশ্বরীর বল্লভের খাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানান, বন্যায় তার ইউনিয়নে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই ইউনিয়নের ফান্দের চর, খাসমহল, টাপুরচর, কালারচর, হাসির চর, মহসিনের চর ও মেছেরের চর ডুবে আছে পানিতে।
সদর উপজেলার চর পার্বতীপুর গ্রামের আবদার বলেন, তিনদিন থেকে পানিতে ডুবি আছি। ঘরে খাবার নেই, হাতে কাজ নেই। অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে। কেউ এখন পর্যন্ত খোঁজ খবর নেয়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, বন্যা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার বন্যার্তদের জন্য খয়রাতি ৯০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।