নিজে প্রতিরোধের চেষ্টা করায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান হামলার শিকার বিবেকানন্দ পাঠাগার ও মন্দিরের সেবায়েত পলাশ চক্রবর্তী শোলক (৪৬)।
শুক্রবার রাত ১টার দিকে মন্দিরে এ ঘটনায় পলাশ সামান্য আহত হলেও বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।
পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, মন্দিরের পাশে একটি বাড়িতে থাকেন তিনি। রাত ১টার দিকে বসতঘরের টিনের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে তিনি বেরিয়ে আসেন। এ সময় মুখবাঁধা এক ব্যক্তি তার দুই সহযোগীসহ পলাশকে গলা ধরে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, ওই সময় তিনি কাছে থাকা একটি শাবল নিয়ে প্রতিহতের চেষ্টা করেন এবং তাকে বাঁচাতে চিৎকার করতে থাকেন। ওই সময় ধস্তাধস্তিতে হামলাকারীদের হাতে থাকা চাপাতির আঘাতে তার বাম হাত সামন্য জখম হয়।
“এরপর হামলাকারী তিন সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়।”
শনিবার দুপুরে জেলা পরিষদ প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান, জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিজয় শংকর রায়সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ পশাশের বাড়ি যান।
জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, সেবায়েত পলাশসহ অন্যান্য মন্দিরের পুরোহিতদের নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি বিজয় শংকর রায় সেবায়েতের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও উৎকণ্ঠা জানিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
ঢাকার গুলশানে একটি স্প্যানিশ বেকারিতে জিম্মি সংকট চলাকালে শনিবার ভোররাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সেবায়েত পঞ্চাশোর্ধ্ব ভবসিন্ধু বরকে কুপিয়ে আহত করে অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গুলাশনের ওই হোটেলে ২০ বিদেশি জিম্মিকে জবাই করে হত্যা করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাষ্ঠসাগরা গ্রামের শ্রী শ্রী রাধামদন গোপাল বিগ্রহের (মঠ) সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে (৫০) একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
গত দেড় বছরে লেখক-প্রকাশক, ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, সমকামী অধিকার কর্মী, বিদেশি, বৌদ্ধভিক্ষু, ধর্মান্তরিত ও ভিন্ন মতের মুসলিম ধর্মগুরুসহ বেশ কয়েকজন হিন্দু পুরোহিতকে একই কায়দায় কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
এসব ঘটনার বেশ কয়েকটিতে জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করলেও সরকার দেশে আইএসের অস্তিত্ব অস্বীকার করে আসছে।