প্রতিবেদন দিতে না পারার জন্য সিআইডির ওই প্রতিবেদন না পাওয়াকে কারণ দেখাচ্ছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা, যিনি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের সদস্য।
তনু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম ময়নাতদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়ার কথা কুমিল্লা মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানালে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা উঠে। এরপর আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হয়, যার প্রতিবেদন এখনও আটকে আছে।
এরমধ্যেই হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি ঘটনাস্থলে পাওয়া আলামত পরীক্ষা করে কয়েকজনের ডিএনএ নমুনা পাওয়ার কথা জানিয়ে বলে, খুনের আগে ধর্ষিত হয়েছিলেন তনু।
ওই ডিএনএ প্রতিবেদন নিয়ে সিআইডি ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের মধ্যে টানাপড়েন চলছে।
এর মধ্যে গত রোববার কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুস্তাইন বিল্লা নিহতের শরীরের দুটি নমুনার ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদেরকে দিতে আইডিকে নির্দেশ দেন।
বুধবার দুপুর পর্যন্ত ডিএনএ প্রতিবেদন পাননি বলে জানান দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী দলের সদস্য ডা. কামদা সাহা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই প্রতিবেদন পেলে দুই কার্যদিবসের মধ্যে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারব।”
প্রকাশ না করার শর্তে এক সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ থেকে ডিএনএ প্রতিবেদন দুটি সরাসরি চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হতে পারে অথবা বাহক মারফতও পাঠানো হতে পারে।
তবে কবে বা কখন পাঠানো হবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর লাশ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা চালায় সিআইডি।
সেনানিবাস বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে তনু নিজেদের কোয়ার্টার থেকে অন্য কোয়ার্টারে ছাত্র পড়াতে গিয়ে খুন হন।
লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ধর্ষণের সন্দেহের কথা জানালেও পরদিন ২১ মার্চ ময়নাতদন্তের পর ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
এনিয়ে সারাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়।
দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দিতে দেরিতে ক্ষুব্ধ তনুর বাবা ইয়ার হোসেন গত ২৫ মে চিকিৎসকদের কাছে একটি আইনি নোটিস পাঠান।
‘কালক্ষেপণের কারণ দর্শানোর নোটিসের’ জবাব তৈরি হয়েছে জানিয়ে ডা. কামদা সাহা বুধবার বলেছেন, “তা আজই (বুধবার) দেওয়া হবে।”
আইনি নোটিসটি পাঠানো হয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহসীনুজ্জামান চৌধুরী, ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা ও প্রথম ময়নাতদন্তকারী ডা. শারমিন সুলতানাকে।
এক সপ্তাহের মধ্যে তার জবাব চেয়েছেন তনুর বাবা।