শুক্রবার দুপুরে ১১ নম্বর পশ্চিম সূত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেককে আদালত কারাগারে পাঠায় বলে ধামরাই থানার এসআই আলমগীর হোসেন জানান।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে মারধর করার ঘটনায় সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড়ের মধ্যে এই অভিযোগ পাওয়া গেল।
ওই বিদ্যালয়ের ওই প্রধান শিক্ষিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অফিসকক্ষ পরিবর্তনের কারণে সোমবার আব্দুল মালেক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন ও মোসাম্মৎ কানিজ ফাতেমাকে সাথে নিয়ে আমাকে মারতে আসেন।
“আমি বিদ্যালয়ের টয়লেটের ভিতর পালালে সেখান থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করেন। এ সময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী মুহাম্মদ ফজলুল হকসহ সব শিক্ষার্থীর সামনে মারধর করেন।”
তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় বলে প্রধান শিক্ষিকা দাবি করেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফজলুল হক বলেন, “প্রধান শিক্ষিকা ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো অফিস রুম পরিবর্তন করায় তার সাথে একটু রাগারাগি হয়। ওই মুহূর্তে তিনি বাথরুমে প্রবেশ করলে আমরা ধারণা করি, তিনি রাগে হয়ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারেন।
“তাই সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক বাথরুমের দরজা জোরে ধাক্কা দিয়ে তাকে টেনে বাইরে নিয়ে আসেন। তখন প্রধান শিক্ষিকা পা থেকে জুতা খুলে সহ-সভাপতিকে আঘাত করলে তিনি শিক্ষিকার গালে দুটি চড় মারেন।”
ধামরাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতুর রহমান বলেন, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও অন্যরা প্রধান শিক্ষিকাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন।”
এ বিষয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনতাজ উদ্দিন বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
তিনি ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও দুই সহকারী শিক্ষককের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এসআই আলমগীর বলেন, প্রধান শিক্ষিকার জিডিকে বৃহস্পতিবার মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও বালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য আবদুল মালেক, সহকারী শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন ও মোসাম্মৎ কানিজ ফাতেমাকে আসামি করা হয় বলে তিনি জানান।
“তাদের মধ্যে আবদুল মালেক শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে এসআই জানান।