ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু: ভোলায় প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ভোলা জেলা প্রশাসন।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2016, 01:22 PM
Updated : 20 May 2016, 01:22 PM

ঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকে হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ চলছে।

ইতোমধ্যে দেশে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)।

আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে ভোলা সংলগ্ন মেঘনা, তেঁতুলিয়া, ইলিশা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২/৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ ভোলা থেকে বরিশাল ও লক্ষীপুর রুটের ফেরি এবং ঢাকা, বরিশালসহ সকল রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে।

ঝড় মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন।

এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে ভোলা উপকূলের তুলাতলী, ইলিশা, রাজাপুর, কোড়ারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশ  রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভোলা ইউনিট ও সিপিপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সতর্কতা বিষয়ে মাইকে প্রচার চালাতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসক সেলিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলায় ১০ হাজার ২০০ সেচ্ছসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে ১১টি কন্ট্রোল রুম। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৯২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জেলার তিন শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসন শুক্রবার থেকে জেলার সকল সরকারি দপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে বলেও তিনি জানান।

বিআইডব্লিউটিএ-এর ভোলার কর্মকর্তা মো. নাসিম জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে শুক্রবার বিকাল থেকে ভোলার বিভিন্ন ঘাট থেকে ঢাকা, বরিশালসহ সকল রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ফেরি ইনচার্জ আবু আলম হাওলাদার জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা বরিশাল রুটের ফেরী চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

ভোলা সিপিপি উপ-পরিচালক মো. সাহাবুদ্দিন  জানান, দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলায় ৫ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা জুড়ে রেড ক্রিসেন্ট কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন।

ভোলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা জামিলুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে প্রায় ১২শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। গত রাত থেকে সেটি একই স্থানে রয়েছে।

“তবে যে কোনো সময় উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ভোলা থেকে এর দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার।”

ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্বে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় সমুদ্রবন্দরগুলোতে বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর, কক্সবাজারকে ৬ নম্বর এবং পায়রা ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর ‘বিপদ সংকেত’ দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকেই দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বইছে স্বাভাবিকের তুলনায় শক্তিশালী ঝড়ো হাওয়া। 

এই ঝড় আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ চট্টগ্রাম-নোয়াখালী অঞ্চলের ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।